বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, এ সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গভবনের সামনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শরিক হয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবারের আমরা চুপ্পুকে অপসারণ করবো। সব রাজনৈতিক দলের পরামর্শের ভিত্তিতে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবে। সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা যদি পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবে তা নির্ধারণ না করে চুপ্পুকে অপসারণ করি, তাহলে পাশের দেশগুলো আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাবে। শুধু তা-ই নয়, আমাদের দেশে রাষ্ট্রপতি নেই, এটা নিয়ে তারা যেকোনও সময় আমাদের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাই ১৫ বছর ধরে নির্যাতিত রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শের ভিত্তিতে আমরা রাষ্ট্রপতি নির্ধারণ করবো।
এদিকে আগামীকাল বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে ‘টেনেহিঁচড়ে’ ক্ষমতা থেকে নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আগামীকাল বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনের সামনে সবাইকে উপস্থিত হওয়ার জন্য জানিয়েছে। গণঅধিকার পরিষদের তারেক রহমান এই ঘোষণা দেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে পুলিশ বঙ্গভবনের দিকে এলে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলার মুখে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অস্ত্র ফেলে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেন বলে জানা গেছে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ জড়ো হয়ে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় বঙ্গভবনের গেটে সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়। পরে রাত ১১টা ২০ মিনিটে বঙ্গভবনে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম।
এ সময় তারা বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে। আর সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কাকে বানানো যায়, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তারা আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে প্রতিবেশী দেশগুলো ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমরা এই সুযোগ কাউকে দেবো না।
পরে রাত ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা চলে যাওয়া পর আন্দোলনকারীদের সংখ্যা কমতে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে চলতি সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, বর্তমান সংবিধান বাতিল ও ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নিষিদ্ধসহ পাঁচ দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন।
এই সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে পুনরায় রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। তারা হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবন পর্যন্ত এগিয়ে যায় তারা। পরে তারা বঙ্গভবনের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।