রেলের মন্ত্রী ও সচিবসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের টেলিফোনে বা মৌখিক নির্দেশে ট্রেনের টিকিট বরাদ্দ রাখার সুবিধা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ প্রতিশ্রুতি দেন।রেলের কর্মকর্তাদের জন্য স্টেশনভিত্তিক টিকিট ধরে রাখা হয়। সাধারণত রেলওয়ের উচ্চপর্যায়ের
কর্মকর্তারা এসব টিকিটের সুবিধা নিয়ে থাকেন। আবার অনেকেই ফোনে অনুরোধ করে টিকিট কাটিয়ে নেন। তবে এসব সুবিধা আর থাকবে না বলে তিনি জানান। ট্রেন থেকে মৌখিকভাবে টিকিট বন্ধ করা রাখা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেলে অনেকেই কর্মকর্তা আছেন যারা এখানে কাজ করেন। তারা টিকিট নেন। কিন্তু এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না। এটা জনগণের সম্পত্তি। রেলের সচিব, মন্ত্রীর জরুরি কাজ আছে বলে অন্যদের নাই এমনতো না— এটা এখন থেকে বন্ধ থাকবে।’তিনি বলেন, ‘দেশটাকে সরকার সাধারণ মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চায়। মৌখিক বা টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে এখন থেকে। আবার বিভিন্ন স্টেশন থেকেও টিকিট বরাদ্দ (কোটা) আছে। এখন সেটা এক স্টেশনে বিক্রি না হলে অন্য স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। এসব বিষয় রেলের অনলাইন টিকিট পদ্ধতির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজকে বলা হয়েছে। তারা এগুলো ঠিক করবে।’
সংবাদ সম্মেলনের ট্রেনের অনলাইন টিকিটে কিছু পরিবর্তন ও সুবিধার কথা জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। এর আগে আগে চালডাল ডটকমের নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলী, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর ফিজার আহমেদ ও অনলাইন বিশেষজ্ঞ আনিকা জারার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁদের সঙ্গে অনলাইন টিকিট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা সবাই ভালো কম্পিউটার এক্সপার্ট। রেলের টিকিট পদ্ধতি নিয়ে একটা ডায়াগনস্টিক হয়েছে। তাদের প্রেজেন্টেশনে দেখা গেল, কমলাপুর স্টেশন থেকে টিকিট চাইলেন, তবে সেখানে নেই। কিন্তু তেজগাঁও স্টেশন থেকে আছে। আবার ৭টার ট্রেনে টিকিট নাই কিন্তু ১০টার ট্রেনে আছে। এই বিষয়গুলো যাত্রীরা জানতে পারছেন না।’
সহজকে এসব বিষয় ঠিক করার কথা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘যাত্রী যেন এখন থেকে এটা দেখতে পান কখন, কোথায় কোন স্টেশন থেকে টিকিট আছে। সহজ বলেছে, আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে এটা ঠিক হবে। না হলে যাত্রীরা অভিযোগ করবেন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট পাওয়া যায় না কিন্তু কালোবাজারে ২০০ বা ৩০০ টাকায় টিকিট পাওয়া যায়। যারা কালোবাজারি করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা রেলের লোক তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেব। আমরা সমস্যার গোড়ায় যেতে চাই। সবাই বলে এই সরকার কিছু করে না। কিন্তু এটা সময় লাগবে। আমরা গত এক মাসে সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’