যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতগামী যাত্রীদের যাতায়াত কমে গেছে। ভারতীয় দূতাবাস বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করায় যাত্রী অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। এতে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে।
বেনাপোল চেকপোস্টে ইমিগ্রেশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেনাপোল দিয়ে ভ্রমণ কর বাবদ বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য ভারতীয় ভিসা সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু যাদের জরুরি প্রয়োজন, তাদের ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে যাত্রী যাতায়াত কমে যাওয়ায় রাজস্ব কমতে শুরু করে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল দিয়ে যাত্রী যাতায়াতে ৫ আগস্টের আগে প্রতি মাসে গড়ে ১৫ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আয় হতো। বর্তমানে রাজস্ব আয় তিন কোটিতে নেমেছে। আগে প্রতিদিন সাত-আট হাজারের বেশি যাত্রী পারপার হতো। বর্তমানে সেই সংখ্যা সাড়ে তিন থেকে চার হাজারে নেমেছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় অধিকাংশ পাসপোর্টযাত্রী এই পথে ভারতে যেতেন। এর মধ্যে বেশি যেতেন চিকিৎসা নিতে। বর্তমানে বিশেষ বিবেচনায় চিকিৎসা ভিসা চালু থাকলেও পর্যটন, ব্যবসা এবং শিক্ষার্থী ভিসার যাত্রী নেই বললেই চলে। ভারত সরকার ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সবাই। এতে প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও।
ভারতে চিকিৎসা করাতে যাওয়া তহিদুল ইসলাম বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছি। বর্তমানে ভিসার খুব সমস্যা। আবেদনের দীর্ঘদিন পর কোনও রকম চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল ভিসা পেলেও ভ্রমণ ভিসা একদমই পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী দিনে ভিসা পাবো কিনা সন্দেহ আছে।
ভারতগামী আল আমিন বলেন, আগে বেনাপোল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের ভিড় থাকতো। কিন্তু আজ এসে দেখলাম একেবারে ভিড় নেই। আমরা খুব নিরিবিলি যাচ্ছি। এখন যেহেতু ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। আমাদের ভিসার মেয়াদও শেষ পর্যায়ে। পরবর্তীতে আর ভিসা পাবো কিনা জানি না।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ ভূঞা বলেন, ‘বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে আগে প্রতিদিন ৭/৮ হাজারের বেশি যাত্রী পারপার হতো। বর্তমানে সেই সংখ্যা সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজারে নেমেছে। ভারত ভিসা না দেওয়ায় যাত্রী সংখ্যা নেই বললেই চলে।’