নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড কোম্পানির কাছে গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সোমবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১২টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
লিখিত বক্তেব্যে পাঠ করেন বিনিয়োগকারীরা। লিখিত বক্তেব্যে তারা বলেন, আমরা খুলনা জেলার অধিবাসী, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট মিঠাপুকুর পাড় কে আলি রোডস্থ আঃ মান্নান তালুকদার বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট স্টক থেকে একটি লাইসেন্স করে যাহার গভঃ রেজিঃ নং ৮৯১১৪/১০। নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিঃ নামে কোম্পানি খুলে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত ও কোরআন হাদিসের কথা বলে খুলনার কিছু স্বনামধন্য আলেমদের সামনে রেখে, লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ মুনাফা প্রদান, চটকদার বিজ্ঞাপন, পর্যাক্রমে এজাক্স জুটমিল ক্রয় এবং উদ্বোধন দেখিয়ে খুলনার সরল মনা প্রায় তিন হাজার চারশো সদস্যর কাছ থেকে একাশি কোটি টাকা বিনিয়োগ নেয়। গত ২০১৮ সালের নভেম্বর হতে বয়রা বাজার খোকন শপিং কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় অবস্থিত কম্পানির খুলনা শাখা অফিসের সকল ধরনের লেনদেন বন্ধ করে দেয়, এবং পর্যায়ক্রমে অফিস স্টাফদের বেতন, অফিস ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার কারনে অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে খুলনার সদস্যদের একটি টিম বাগেরহাটের হেড অফিসে কোম্পানির এমডি আব্দুল মান্নান তালুকদার সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা মৌখিক ও লিখিত একাধিকবার টাকা ফেরত দেয়ার চুক্তি করে কিন্তু যার একটিও বাস্তবায়ন করে নাই ফলশ্রুতিতে বিনিয়োগকৃত হাজার হাজার সদস্য আজ নিঃস্ব সর্বস্বান্ত।
এই কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী সদস্যদের একটি অংশ অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী ও মিল শ্রমিক, যারা নিজেদের জীবনের শেষ সম্বল বিনিয়োগ করে এখন মানবতার জীবনযাপন করছে আর্থিক সংকটের কারণে বিনা চিকিৎসায় শত শত সদস্য জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। যারা জীবিত আছে তারা প্রত্যেকে জীবন্ত লাশে পরিনত হয়েছে।
কোম্পানির এমডি আব্দুল মান্নান তালুকদার বর্তমান দুদকের দায়েরকৃত মানি লন্ডারিং মামলায় জেলহাজতে আছে। সদস্যদের বিনিয়োগকৃত অর্থের দ্বারা ক্রয়কৃত সম্পত্তি কোম্পানির এমডি আব্দুল মান্নান তালুকদারের মাতা, স্ত্রী, সন্তান, শ্যালক, ভাই সহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দ্বিধায় বিক্রিয় করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং এখনো নিচ্ছে, এমডি ও তার আত্নীয় স্বজন সহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আচরণে এখন আমরা হতাশ, আমরা আমাদের মূলধন হারানোর শঙ্কায় এখন দিশেহারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি এই কোম্পানির কার্যক্রম খুলনা বাগেরহাট এবং পিরোজপুর জেলায় বিভিন্ন শাখা অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হতো বাঘেরহাট এবং পিরোজপুরের সদস্যরা ও একই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
আমরা আজকের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অতিদ্রুত নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিঃ বাগেরহাটে এই কম্পানিতে রিসিভার নিয়োগ করে হাজার হাজার সদস্যদের জমাকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করুন ।
আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিকূল প্রতিফল বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষজনের ভাষা বোঝে এবং কষ্ট দূর হোক লাঘব করে সাধারণ মানুষের কষ্ট যত ফেরত পেতে আমরা বিশ্বাস করি সরকার ও প্রশাসন সদস্যদের পক্ষে কার্যকারী ভূমিকা নেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস সকলের সুস্বাস করছি আল্লাহ হাফেজ।
সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ মিজানুর রহমান গাজী, উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, মাওলানা মফিজুল ইসলাম, মাওলানা জাহিদুর রহমান, মাওলানা ওবাইদুর রহমান, কারী সৈয়দ রুস্তম আলী, মোঃ শফিকুল ইসলাম, শেখ আলী আকবর প্রমুখ।