ইমদাদুল হক:: পাইকগাছায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমন ধান কর্তন শুরু হয়েছে। উঁচু ক্ষেতের আমন ধান কর্তন ও ঝাড়াই চলছে। তবে নিচু ও মৎস্য লিজ ঘেরের কোন আমন ক্ষেতের ধানে ফুল ফুটছে, দুধ এসেছে ও কোন ক্ষেতের ধান সবুজ রং ধারণ করেছে মাত্র। ২০ থেকে ২৫ দিন পরে এসব ক্ষেতের ধান কাটার উপযোগী হবে। তবে উচু ক্ষেতের ধান আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে কাটা সম্পন্ন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
বৈরি আবহাওয়ার জন্য কৃষকরা সময় মত আমনের আবাদ করতে পারেনি। কৃষকরা আগাম কিছু ক্ষেতে সেচ দিয়ে চারা রোপন করেছে আবার দেরিতে প্রচুর বৃস্টি হওয়ায় নাবি আবাদ করতে হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্য এলাকা থেকে উপকূল এলাকায় এক মাস পরে কৃষি কাজের পরিবেশ তৈরি হয়। আবহাওয়া জনিত কারণ ও মৎস্য লিজ ঘের গুলোতে দেরিতে আমনের আবাদ করা হয়। সে জন্য আমন ধান কাটাও দেরিতে শুরু হয়। নতুন আমন ধান আশানারূপ দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আমন ধান মন প্রতি সাড়ে ১৪শ থেকে সাড়ে ১৫শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের থেকে বিচুলীর চাহিদা থাকায় কৃষকরা বেশী লাভবান হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৫ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলায় উঁচু ক্ষেত্রের প্রায় ৫ হাজার ৩শত হেক্টর জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কর্তনকৃত ধানের হেক্টর প্রতি ফলন হাইব্রীড ৫.৯ মেট্রিকটন ও উফশী ৫.৬ মেট্রিকটন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। আর নাবিতে লাগানো ক্ষেতের ১০ ভাগ ধানে ফুল ধরেছে, ২০ ভাগ ক্ষেতের ধানে দুধ হয়েছে ও ৭০ ভাগ ক্ষেতের ধান কাচা ধারণ করেছে।
উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর ব্লকের কৃষক আলাউদ্দিন, পুরাইকাটী ব্লকের কৃষক ফারুক হোসেন ও তোকিয়া ব্লকের কৃষক শফিকুল জানান, বৈরি আবহাওয়ার পরও তাদের ক্ষেতের আমনের ফলন ভালো হয়েছে।
মটবাটি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, তার মৎস্য ঘেরে আবাদকৃত ক্ষেতের ধান সবে ফুল ধরেছে। তাছাড়া মাজড়া পোকা লাগায় অতিরিক্ত পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেতের ধানে চিটার পরিমানও বেশী হচ্ছে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. একরামুল ইসলাম জানান, আমনের ফলন ভাল হয়েছে। আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের আমন আবাদ শুরু করতে কিছুটা দেরি হলেও পরে প্রচুর বৃষ্টিতে লবণাক্ত মাটি পরিশোধিত হওয়ায় আমনের ফলন ভাল হয়েছে।