অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘গানবাংলার’ মালিকানা দখলের অভিযোগে কৌশিক হোসেন তাপস ও তার স্ত্রী ফারজানা মুন্নীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) আদালত সূত্রে মামলার বিষয়টি জানা গেছে।তাপস টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও মুন্নী চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- রবি শংকর মৈত্রী, এম আমানুল্লাহ খান (চঞ্চল খান), সৈয়দ নাবিল আশরাফ। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় গত ৪ নভেম্বর তাপসকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশীদ। আগামী ৯ ডিসেম্বর তাপসের উপস্থিতিতে গ্রেফতারের বিষয়ে শুনানি হবে।
মামলার বাদী সৈয়দ সামস উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেন, ২০১১ সালের ২৫ জুলাই মো. বদরুদ্দোজা সাগর, বখতিয়ার শিকদার ও রবি শংকর মৈত্রী মিলে প্রাইভেট স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিষ্ঠার জন্য বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামের একটি প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেন। কোম্পানি গঠনের সময় মামলার বাদী ৭ হাজার প্রাথমিক শেয়ার এবং বখতিয়ার শিখদার, রবি শংকর মৈত্রী ও বদরুদ্দোজা সাগর প্রত্যেকে ১ হাজার করে সর্বমোট ১০ হাজার শেয়ার নেন, যার প্রাথমিক মূলধন ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর সৈয়দ সামস বার্ডস আই মাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং গানবাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল (প্রস্তাবিত) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে থাকার সময় আমানুল্লাহ খানের বাসায় যান। আসামি রবি শংকর ও আমানুল্লাহ খানের অনুরোধে তিনি ওই বাসায় গিয়েছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আনুমানিক রাত ৮টার দিকে আসামি কৌশিক হোসেন তাপস, ফারজানা মুন্নী, সৈয়দ নাবিল আশরাফসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন কিছু কাগজ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।তাপস ও নাবিল আশরাফের হাতে থাকা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ফিল্মি কায়দায় সব আসামির সহযোগিতায় সৈয়দ শামস উদ্দিন আহমেদ ও মো. বদরুদ্দোজা সাগরকে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আটকাবস্থায় আসামিদের কথাবার্তায় বাদী বুঝতে পারেন যে, আসামিরা বার্ডস আই ম্যাস মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন পিএলসি নামীয় কোম্পানিতে বাদী ও বদরুদ্দোজা সাগরের ৮ হাজার শেয়ারের মালিকানা আত্মসাৎ করবে। একপর্যায়ে বাদী ও মো. বদরুদ্দোজা সাগর প্রাণনাশের ভয়ে ভীত হয়ে প্রাণে বাঁচতে কাগজে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর আসামিরা বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর গ্রহণের বিষয়ে কারও কাছে কোনো তথ্য ফাঁস করলে তৎকালীন প্রশাসনকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে মামলায় জড়াবে এবং প্রয়োজনে জীবন শেষ করে দেবে বলে হুমকি দেয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার হন তাপস। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে কারাগারে আছেন তিনি।