গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে নতুন সরকার গঠন করেছি। কিন্তু সাড়ে চার মাসেও সরকারের কাজ জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। জনগণ বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে, এটা কী সরকার গঠন করেছে? জনগণের প্রত্যাশা ছিল রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী লড়াকু বিপ্লবীদের নিয়ে একটা বিপ্লবী সরকার হবে। কিন্তু সেটা হয়নি, হয়েছে বন্ধুবান্ধব পরিচিত সার্কেলের একটি সরকার। তারপরও আমরা স্বাগত জানিয়েছি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ‘জুলাই বিপ্লব ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গণঅধিকার পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
নুরুল হক নুর বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পারিস্থিতি এবং প্রশাসনকে ঠিক করতে পারেনি। বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, এখনও সিন্ডিকেট। হাসিনার পতন হয়েছে, তাহলে এখন কেনো পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে? কেনো বাজারে এখনও সিন্ডিকেট চলে? কারণ উপদেষ্টা পরিষদে যারা আছেন তারা অধিকাংশই অনভিজ্ঞ, রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের ধারণাও কম। রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনীতিবিদদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
নুর আরও বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ হওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় দায়ী দেশের আমলাতন্ত্র। এসপি-ডিসি বহাল তবিয়তে আছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ দেশ ছেড়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, গ্রেফতার হয়েছে। কয়জন এসপি-ডিসি, ইউএনও-ওসি গ্রেফতার হয়েছে? এই এসপি-ডিসি, ইউএনও-ওসিরা শেখ হাসিনার অপকর্মের সহযোগী ছিলেন। হাসিনার বিচারের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গণহত্যার প্রধান মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনাকে ভারতের সঙ্গে শক্ত দেনদরবারের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে পৃথিবীর বুকে দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কাজী রাজিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।