বাগেরহাটের মোল্লাহাটে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা পাচ টি ইট ভাটার মালিককে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপর পর্যন্ত মোল্লাহাটের এই পাঁচটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা সুলতানা নীলা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা সুলতানা নীলা বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যেসব ইট ভাটার কাগজপত্র নেই, সেই ভাটাগুলো বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। তাই পরিবেশ দূষনকারী ও অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় মোল্লাহাটের মেসার্স মানিক ব্রিকস, মেসার্স খান ব্রিকস, মেসার্স শিকদার ব্রিকস, এবং দিপ ব্রিকস ১ ও দিপ ব্রিকস ২ কে সর্বমোট সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহায়তায় পরিচালিত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা সুলতানা নীলা। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা উপপরিচালক আসাদুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম।
অভিযানে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের দায়ে মোট ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিনা সুলতানা নীলা বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ৮ ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে তালিকাভুক্ত ৫ টি ইট ভাটা প্রতিষ্ঠানকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শুধু জরিমানা নয়, এর পাশাপাশি ৫ টি ইট ভাটা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মুসলেকা নেওয়া হয়েছে এবং ৭ দিনের মধ্যে ইট ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একটি ইট ভাটা করতে গেলে অনেক গুলো লাইসেন্স করতে হয়, দুঃখ জনক ভাবে এই ৫ টি ইট ভাটার কারো পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন করা ছিল না। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ৮ এর ১ ও ৩ ধারায় বলা হয়েছে ইট ভাটা এমন যায়গায় স্থাপন করা যাবে না, যার ১ কি:মি: এর মধ্যে আবাসিক, স্কুল – কলেজ- মাদ্রাসা বা কৃষি জমি রয়েছে। আমরা এই ৫ টি ইট ভাটার ১ কি:মি: এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকা পেয়েছি যেটা আইনে সম্পুর্ন অবৈধ। এসকল নানা ধরনের আইন লঙ্ঘনের অপরাধে এই জরিমানা আদায় করা হয়।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা উপ-পরিচালক আসাদুর রহমান বলেন ইটভাটা থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হয় এর মধ্যে অনেক দূষণকারী পদার্থ থাকে, যেমন সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ডাষ্ট যা আমাদের নিঃশ্বাসের সাথে গিয়ে ফুসফুস আক্রান্ত হয়, শ্বাসকষ্ট সহ পরোক্ষভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি হয়। এই দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর এই অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।