খুলনা খালিশপুর হাউজিং এষ্টেট নর্থ জোন এলাকার একটি প্লট অবৈধ দখলমুক্ত করেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনা। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে দীঘদিন ধরে এ জমিটি দখলে রেখেছিলো একটি মহল। এই সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করে সরকারের আওতায় আনা হয়েছে। দীর্ঘ ১মাস অবৈধ দখলে থাকা এই জমি পুনরুদ্ধার করেছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনা অফিস।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে দখলকারি মোঃ আফিল উদ্দিন তার লোকজন দিয়ে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের এই জমির জায়গা খালি করে দেন। তিনি গত ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে এই প্লটটি টিনের ঘেরা দিয়ে দখল করেন এবং পাচিল দেওয়ার জন্য ইট মজুদ করেন। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলীর একান্ত তৎপরতায় দখলকারিকে নোটিশ করা হয়। এবং পরবর্তিতে দখলকারি জায়গা ছাড়তে বাধ্য হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, জনৈক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আফিল উদ্দিন নিজেকে ভুমিহীন দাবী করে তার বসবাসের জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলো এই জমিটি বরাদ্দের জন্য। প্রকৃত পক্ষে তিনি ভুমিহীন নয়। এন/ডি ৫৭ নম্বর বাড়িতে তিনি বসবাস করে আসছেন এবং তার স্ত্রীর নামে সরকারের এপি ৭৫৭/৭৩ তালিকা ভুক্ত এবং হাউজিং এষ্টেটের বরাদ্দকৃত বাড়িটিও তাদের। মুলত স্থানীয় ভুমিদস্যু ও দখলবাজরা এই জমিটি সরকারের কাছ থেকে মোঃ আফিল উদ্দিনের নামে বরাদ্দ নিয়ে মোটা অংকে বিক্রির পরিকল্পনা করে আসছিলো দীর্ঘদিন ধরে। এই চক্রটি এভাবেই সরকারি জমি দখল করে বরাদ্দ নেয় এবং পরে নিজেরা বিক্রির টাকা ভাগভাটোয়ারা করে নেয়। এমনটাই জানায় এলাকাবাসি।
সরেজমিনে আরো খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকেই এই জমি নিজের নামে বরাদ্দ নেওয়ার নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছে আফিল উদ্দিন। ততকালিন সময়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনা প্রশাসনিক কর্মকর্তার অফিসে কর্মরত রেন্ট কালেকটর হাফিজুর রহমান(বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন) এর মাধ্যমে এই জমিটি বরাদ্দ পাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই হাফিজুর রহমান মূলত আফিল উদ্দিনের আত্মীয় হয়। যার সুবাধে আফিল উদ্দিন তাকে দিয়ে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ায়। যেখানে আফিল উদ্দিন এর তত্ত্বাবধায়নে এই জমিটি আছে এবং তাকে বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই জমিতে তিনি কখনো ছিলেন না এবং এই জমির আংশিক অংশ সহ আরো কয়েকটি প্লট নিয়ে মহামান্য আদালত কর্তৃক চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞ রয়েছে।
এ বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, আমি তাকে বরাদ্দের জন্য সহযোগিতা করেছি ঠিক আছে। তবে আমি কোন অনৈতিক সুবিধা দেই নাই। প্রতিবেদন যা দেওয়ার আমার স্যার দেখে শুনেই দিয়েছিলা।
মোঃ আফিল উদ্দিন বলেন, আমি এই জমি বরাদ্দ পেয়েছি তাই ঘেরা দিয়েছিলাম। আমার কাছে সকল কাগজ আছে। কিন্তু তিনি কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ্ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের নির্দেশনায় দখলকারিকে নোটিশ করেছি। এবং একাধিক বার তাগিদ দেওয়ার পর বুধবার দখলকারি আফিল উদ্দিন তার মালামাল সরিয়ে ফেলেছে।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র আবেদন করে কেউ এই ধরনের জমি দখলে যেতে পারে না। যতক্ষন না পর্যন্ত তাকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ধরনের কাজ যেই করুক আমাদের নজরে আসলে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিবো।