আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘করোনার কারণে পদ্মাসেতুর মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে তা সত্য নয়। আগামী বছরের জুনের মধ্যেই পদ্মাসেতুর কাজ সমাপ্ত হবে এবং যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’
আজ শুক্রবার (৭ মে) মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ৭ মে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের কাছে একটি স্মরণীয় দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কোন অন্যায় করেননি বলে বুকে ছিলে তার অসীম সাহস। এ দেশের মাটি ও মানুষই শেখ হাসিনার রাজনীতির মূল শক্তি। তাই তো কোনো ষড়যন্ত্রই তাকে সেদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই প্রত্যক্ষ করেছেন ইতিহাসের নানান বাঁকবদল। পিতা মুজিব শেখ হাসিনার রাজনীতির গুরু। পিতার মতোই ভালোবাসেন দেশের মানুষকে।’
তিনি বলেন, ‘তাই তো গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে শত বাধা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে এসেছিলেন বলেই সেদিন জনগণের চাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাধ্য হয়েছিল নির্বাচন দিয়ে সরে যেতে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনা সংকটের আবর্তে নিমজ্জমান অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করে একটি সুখী সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রাম শুরু করেন।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে করেন পাপমুক্ত। শেখ হাসিনার হাত ধরেই এসেছে সমুদ্র বিজয়। দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যার সমাধান তার অসামান্য কূটনৈতিক দক্ষতারই পরিচায়ক।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দিন বদলের অভিযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে আজ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরণের মাধ্যমে স্বপ্নের সীমানাকে পৌঁছে দিয়েছেন মহাকাশে। নিজস্ব অর্থায়নে আমাদের সক্ষমতা ও গর্বের প্রতীক পদ্মাসেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে স্বপ্নের কর্ণফুলী টানেল এবং তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের মেট্রোরেল।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সাহসী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশে করোনার প্রথম ঢেউ মোকাবিলা করে দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে শেখ হাসিনার সাহসী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকার মাঝে সমন্বয় করে করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এনেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের ইতিহাসে ৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন উপলক্ষে প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কর্মসূচি পরিহার করা হয়েছে।’
আগামী ১৭ মে শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে দিবসটি পালন করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।