চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবাংলাদেশের ভেতরে মাছ ধরতে এসে আটক হওয়া ভারতীয় জেলেকে ছিনিয়ে নিতে বিএসএফ আগে গুলি চালানোর কারণেই রাজশাহী সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ সদস্যের গুলির জবাবে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় বিজিবি। এতে বিএসএফের এক সদস্য নিহত এবং একজন আহত হন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীতে ১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চারঘাট থানার শাহরিয়ার খাল নামক স্থানে মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মাছ ধরার সময় তিনজন জেলেকে আটকের চেষ্টা করা হয়। এদের মধ্যে দুজন জেলে পালিয়ে যায়। একজনকে জালসহ আটক করে নদীর বাংলাদেশের পাড়ে নিয়ে আসা হয়। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তারা ভারতীয় নাগরিক।
লেফটেনেন্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারি ক্যাম্প থেকে চার সদস্যের একটি টহল দল বিজিবির কোনো অনুমতি না নিয়েই স্পিড বোট নিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাংলাদেশের ভেতরে পাঁচশ থেকে ছয়শ গজের ভেতরে চলে আসে। নদীর এই পাড়ে তারা বিজিবির টহলের নিকট এসে আটক জেলেকে ছেড়ে দিতে বলে।
এসময় বিজিবির টহল দল জানায়, আটককৃতকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা ভারতীয় নাগরিককে ছিনিয়ে নিতে চান। আটক জেলেকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তাতে বাধা দেন বিজিবি সদস্যরা। এক পর্যায়ে বিএসএফ জওয়ানরা বিজিবির ওপর ছয় থেকে আট রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবির টহল দলও পাল্টা গুলি চালায়। এতে বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত সীমান্তের ওপারে চলে যায়।
আটককৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম প্রণব মণ্ডল। তিনি ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি থানার ছিড়াচর গ্রামের বসন্ত মণ্ডলের ছেলে। টহল দল ভারতীয় জেলের কাছ থেকে চার কেজি ইলিশ এবং জাল উদ্ধার করেছে।আটককৃতকে চারঘাট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান বিজিবির এ অধিনায়ক।
এ ঘটনার পর ওই একই স্থানে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।লেফটেনেন্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ জানান, বিএসএফ কমান্ডেন্ট দাবি করেন, তাদের একজন সদস্য নিহত এবং একজন সদস্য আহত হয়েছে। বৈঠকে ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষই নিজের অবস্থান উপস্থাপন করে। ঘটনার যে বিষয়গুলোতে দু’পক্ষের ঐক্যমত হয়নি সেগুলো নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এনিয়ে পরবর্তীতেও পতাকা বৈঠক করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।