চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃআমবয়ানের মধ্য দিয়ে যশোরে শুরু হয়েছে তিন চিল্লার জোড় আঞ্চলিক ইজতেমা। ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশের অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর উপ-শহর ক্রীড়া উদ্যানে ভারতের দিল্লির মুরব্বি মাওলানা আব্দুর রহমানের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমা। যশোরসহ ২০ জেলা থেকে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এতে অংশ নিচ্ছেন। আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টায় ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুম্মার নামাজ আদায় হবে। এদিন মূল বয়ান পেশ করবেন ভারতের মাওলানা ইউসুফ আলী ও মাওলানা আব্দুর রহমান খান।
জোড় ইজতেমা মাঠের জিম্মাদার মাওলানা নাসিরউল্লাহ জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নঁওগা, নাটোর ও পাবনা থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন। মুসল্লিদের জন্য এক হাজারের ওপরে ল্যাট্রিন বসানো হয়েছে। গোসলের জন্যে লেক, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খেদমতে এক হাজারের ওপরে স্বেচ্ছাসেবক ও বয়ান শোনার জন্য ২০০ মাইক লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি জোরালো নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল থাকছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজে ইমামতি করেন মণিরামপুরের মাসনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইয়াহহিয়া।
তিনি আরো বলেন, তিন দিনের এ জোড় ইজতেমায় বাংলাদেশ ছাড়া ভারত-পাকিস্তানের মোট ২০ জন শীর্ষ মুরব্বী অংশ নিচ্ছেন। ইজতেমাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে। ৬০০ পোশাকধারী পুলিশসহ সাদা পোশাকের বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, পুরাতন সাথীরা ছাড়াও সারাদেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জামাতে ইজতেমার সাথীরা মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। এসব সাথীদের থাকা-খাওয়া নিরবিচ্ছিন্ন ও নিরাপদ করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইজতেমায় বিদেশি মেহমানদের থাকার আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে। সাত নভেম্বর শনিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তিন দিনের এ জোড় ইজতেমা শেষ হবে। আখেরি মোনাজাতে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ নর-নারী অংশ নেবেন বলে আয়োজকরা জানান। আখেরি মোনাজাত শেষে ৬০০টি তাবলিগের বিভিন্ন চিল্লার জামাত সারাদেশে দাওয়াতি কাজে বের হবেন।
প্রথম দিনে ইসলামী আকিদার উপরে বয়ান করেন তাবলিগ জামায়াতের মুরব্বিরা। এ উপলক্ষে যশোর উপ-শহর মাঠে প্রায় সাত লাখ বর্গফুট জায়গাসহ গোটা মাঠ ত্রিপল ও চট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, ঢাকা কাকরাইল মাদ্রাসার মুসল্লিরা ইতিমধ্যে ইজতেমা মাঠে এসেছেন। এবার প্রায় এক হাজার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীর থাকার সু-ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, যশোরে ইজতেমায় ভেন্যুর ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। সে ক্ষেত্রে নরমাল ফোর্স ও সিভিল ড্রেসে ফোর্স থাকবে। সে কারণে সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহ থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়েছে। এছাড়া ইজতেমাস্থলের পাশে স্কুলে পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।