আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট। সেই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ দল আজ দুপুরে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। সিরিজ বাঁচানোর টেস্টের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব। নেতৃত্ব থেকে তাঁর সরে দাঁড়ানোর গুঞ্জন এখন জোরালো। বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত চাপেই অধিনায়কত্ব করতে পারছেন না শান্ত।
আজ বিকেলে মিরপুরে ফাহিম বলেছেন, ‘তার (শান্ত) মতো একজন খেলোয়াড়ই আমাদের কারণে অধিনায়কত্ব করতে পারছে না। আমাদের মতো দেশে অধিনায়ক হওয়া মানে সব সময় চাপে থাকতে হবে, ভালো পারফরম্যান্স হবে না, তাকে নিয়ে আমরা যে পরিমাণ সমালোচনা করি, যেভাবে সমালোচনা করি, তার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ভালো না খেলার কারণও হয়তো সেটা।’
শান্তর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং ব্যাটে রানের খরা নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। টানা ১৬ ইনিংসে শুধু একটি ৮০ রানের ইনিংসই তাঁর বড় প্রাপ্তি, ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছিলেন এই ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত মিরপুর টেস্টে করেছেন ৭ ও ২৩ রান। অন্য দুই সংস্করণেও তিনি দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না প্রত্যাশা অনুযায়ী। বিসিবি সূত্রে জানা যায়, শান্ত মৌখিকভাবে বোর্ডকে জানিয়েছেন, তিনি আর কোনো সংস্করণে অধিনায়কত্ব করতে চান না। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশের বাইরে আছেন; ফিরবেন আগামীকাল। তিনি ফিরলেই অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিসিবি।
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় শান্তকে নানাভাবে সমালোচিত হতে হচ্ছে, ফেসবুকেও তাঁকে নিয়ে সেই আগের মতো নিয়মিত ব্যঙ্গ হচ্ছে। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে এই চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শান্তকে বেগই পেতে হচ্ছে। আজ বিকেলে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম যদিও শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে তাঁর কথায় বোঝা গেল, শান্ত চাপটা নিতে পারছেন না। তিনি বললেন, ‘আমার মনে হয় খুব প্রয়োজন ছিল ওর পাশে থাকা, ওকে সমর্থন দেওয়া। এটা মনে রাখা, সে বাংলাদেশ দলের মতো একটা দলের অধিনায়ক। এই দল খুব অধারাবাহিক। সে নিজেও একজন তরুণ খেলোয়াড়। ওর ব্যাপারে আরেকটু সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল। আমরা যদি শান্তকে না রাখি অধিনায়ক হিসেবে কিংবা সে যদি না থাকতে চায়, কারও না কারও কাছে যেতে হবে আমাদের। তাকে (নতুন অধিনায়ক) তো সেই একই ব্যাপারের মুখোমুখি হতে হবে।’
শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে ফাহিম আরও যোগ করেন, ‘এখানে শান্তর মতো তরুণ অধিনায়কের পাশে বিসিবির থাকা উচিত। এক দিনেই স্টিভ ওয়াহ, হঠাৎ করেই ইমরান খান-ধোনি হওয়া যায় না। আমাদের সংস্কৃতিতে অধিনায়কত্ব গড়ে ওঠে না। আমরা শান্তকে অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক সময় বিনিয়োগ করেছি। কোনো সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধানের পথে হাঁটতে চায় বোর্ড।’