আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্যাহকে গিবত না করার আহ্বান জানিয়েছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, আমি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। আপনি-আমি যুদ্ধ করলে, গিবত গাইলে জনগণের উন্নয়ন হবে না। আপনার-আমার যুদ্ধ করার কী দরকার?
বৃহস্পতিবার বিকালে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিক্সন চৌধুরী যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হওয়ায় ভাঙ্গাবাজার বণিক সমিতির উদ্যোগে ভাঙ্গাবাজার স্বর্ণকারপট্টিতে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেখানে কাজী জাফরউল্যাহর উদ্দেশে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে যুবলীগের পদ দিয়ে মূল্যায়ন করেছেন। এখন গিবত গাওয়ার সময় নেই। যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, তখন গিবত গাইছি। এখন এলাকার উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার সময়।
নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আর হানাহানি নয়, গিবত নয়। ৪০ বছরের অবহেলিত এলাকার উন্নয়ন করতে হবে। দুবার এলাকাবাসী আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি এখন শুধুই কাজ নিয়ে ভাবছি।
নিক্সন ভাঙ্গা পৌরবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘গত পৌরসভা নির্বাচনে আমার সমর্থিত প্রার্থীকে আপনারা ভোট দেননি। তাই পৌরসভার কাজ না হওয়ার দায় আমার নেই। আগামী পৌর নির্বাচনে ভাঙ্গা পৌরসভায় মেয়র পদে আমি যে ব্যক্তিকে সমর্থন দেব, তাকে ভোট দেবেন। উন্নয়ন আমার কাছ থেকে বুঝে নেবেন।’
সভায় উপস্থিত ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী হেদায়েতউল্লাহ সাকলাইনের (কাজী জাফরউল্যার চাচাতো ভাই) উদ্দেশে নিক্সন চৌধুরী বলেন, মঞ্চে উপস্থিত স্বনামধন্য কাজী পরিবারের সন্তান হেদায়েতউল্যাহ সাকলাইন এবং সাহাদাতের (ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান) হাত ধরে ২০১৪ সালে আমার ভাঙ্গার মাটিতে রাজনীতিতে আসা। যদিও আমার চুল-দাড়িতে পাক ধরেছে, তার পরও আমার বয়স কম। জোরে কথা বলি বলে আমার বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হয় বেশি।
ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে কাজী জাফরউল্যাকে হারান নিক্সন চৌধুরী। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই ফল হয়।
কাজী জাফরউল্যাহ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। আর নিক্সন চৌধুরীকে যুবলীগের সবশেষ কমিটিতে প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
এই দুই নেতার মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট। জাফরউল্যাহকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিতে অভ্যস্ত নিক্সন।
সংবর্ধনায় ভাঙ্গাবাজার বণিক সমিতির সভাপতি সহিদুল হক মিরু মুন্সীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী হেদায়েতউল্যাহ সাকলাইন, সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান, ভাঙ্গাবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মুন্সী, কেএম কলেজের সাবেক জিএস লাবলু মুন্সী প্রমুখ।