অবশেষে ইলেক্টোরাল কলেজ আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত করেছে। জয়ী হওয়ার পর প্রথম বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, জনকার ইচ্ছার জয় হয়েছে এবং গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে-
ইলেক্টোরাল কলেজের ঘোষণা অনুযায়ী, বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬ ইলেক্টোরাল ভোট এবং ৮১,২৮৩৪৯৫ বা ৫১ দশমিক ৩৮ শতাংশ পুপুলার ভোট।
তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ ইলেক্টোরাল ভোট এবং ৭৪,২২৩,৭৫৫ বা ৪৬ দশমিক ৯১ শতাংশ পপুলার ভোট।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, দেশের ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ তাকে ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কমলা হ্যারিসকে ভোট দিয়েছেন।
‘আমেরিকায় রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা নিতে পারে না। জনগণ রাজনীতিবিদদের ক্ষমতায় বসায়। এই দেশে গণতন্ত্রের আলো জ্বলেছিল বহু বছর আগেই। আমরা জানি মহামারি অথবা ক্ষমতার অপব্যবহার, কোনকিছুই সেই আলো নেভাতে পারবে না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগকে অহেতুক ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করে বাইডেন বলেন, তার প্রতিক্ষের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার প্রয়াস প্রতিহত করেছেন।
বাইডেনের অঙ্গীকার-
‘মহামারি মোকাবিলার মতো জরুরি কাজ এখন সামনে। দ্রুততার সঙ্গে নাগরিকদের কাছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়াসহ আমেরিকার অর্থনীতি পুনর্গঠনে প্রশাসন অবিলম্বে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’
আমেরিকার ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ভোটপ্রাপ্তির এই রেকর্ডের কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ২০১৬ সালে ট্রাম্প-পেন্সের সমান ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়ে তারা জয়লাভ
৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে অঙ্গরাজ্যের ইলেক্টোরাল প্রতিনিধিরা অঙ্গরাজ্য সভায় আনুষ্ঠানিক ভোট দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি মিলে মোট ৫৩৪টি ইলেক্টোরাল ভোট। এর মধ্যে ২৭০টি ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
পরবর্তী ধাপ-
অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে ইলেক্টোরাল ভোট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওয়াশিংটনে পাঠানো হবে। ৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এসব ভোটের বন্ধ খাম খুলে আবার গণনা করা হবে। সেখানে আইনপ্রণেতারা আপত্তি উত্থাপনের সুযোগ পাবেন।
কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা না ঘটলে আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন শপথ নেবেন। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাত্রা শুরু হবে বাইডেন প্রশাসনের।
এদিকে, ইলেক্টোরাল কলেজের সিদ্ধান্তের পরও ট্রাম্প প্রকাশ্যে বাইডেনের বিজয় মেনে নিচ্ছেন না। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প-সমর্থকদের বিক্ষোভ-সমাবেশ করতে দেখা গেছে। ট্রাম্পের মতোই তার সমর্থকেরা বিক্ষোভ সমাবেশে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে কোথাও কোনো বড় ধরনের অঘটন ছাড়াই অঙ্গরাজ্য সভাগুলো ইলেক্টোরাল ভোটের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।