ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের মজলুম জনতার পক্ষে লড়াই করার জন্য যোদ্ধাদের তালিকা করতে হবে। তালিকা তৈরি করে তাদেরকে বিশ্বসন্ত্রাসী ইহুদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রেরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে সরকার আন্তরিক না হলে জনতা স্পষ্ট ধরে নেবে এ সরকার উপরে ফিলিস্তিনের জন্য মায়াকান্না করে ভেতরে ভেতরে ইসরায়েলের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করছে। সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে আছে এটা দেখানোর জন্য ছাত্রলীগকে মাঠে নামিয়েছে, অপরদিকে পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরাইল তুলে দিয়ে ইসরাইলের সাথে তলে তলে সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
শুক্রবার (১৭ মে) বিকাল ৪ টায় খুলনা নিউমার্কেট বায়তুন নূর মসজিদের উত্তর গেটে ফিলিস্তিনে অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর ও জেলা আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারী মুফতী ইমরান হোসাইন, জেলা সেক্রেটারী হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর সহ-সভাপতি মুফতী আমানুল্লাহ, সহ-সভাপতি আবু তাহের, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মাওলানা মুজিবুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু গালিব, মোঃ রেজাউল করীম, অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, গাজী মিজানুর রহমান, শেখ হাসান ওবায়দুল করীম, মোঃ মহিবুল্লাহ, মোঃ হুমায়ুন কবির, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা আসাদুল্লাহ হামিদী, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, ডাক্তার মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ্যাডঃ কামাল হোসেন, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মাওলানা নাসিম উদ্দিন , বীরমুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, মোহাম্মদ রওশন আলী, আলহাজ্ব সরোয়ার বন্দ, ডাক্তার রাকিবুল ইসলাম, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, হাফেজ আব্দুল লতিফ, আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন, মোল্লা রবিউল ইসলাম, এস এম শাহিন হোসেন, মাওলানা হারুনুর রশিদ, গাজী ফেরদাউস সুমন, মোঃ এনামুল হাসান, মুফতী মইনুল ইসলাম, নুরুল হুদা সাজু, মাষ্টার মঈনুদ্দিন ভুইঁয়া, মাওলানা আবু সাঈদ, মো ইসমাইল হোসেন, আলহাজ্ব মারুফ হোসেন, ক্বারী জামাল হেসেন, কাজী তোফায়েল হোসেন, মোহাম্মদ কবির হোসেন, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুম, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, আলফাত হোসেন লিটন, ইসমাইল হোসেন দুলাল, মোঃ কামরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা এস এম আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইলিয়াস হোসেন, মোঃ ইব্রাহিম খান, রেজাউল করিম, যুবনেতা মুফতি ফজলুল হক ফাহাদ, ইমরান হোসেন মিয়া, আব্দুস সবুর, এস কে নাজমুল হাসান, মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন, মোঃ আমজাদ হোসেন, শিক্ষক নেতা মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে, মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র নেতা মোঃ মঈন উদ্দীন, আবু রায়হান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফরহাদ মোল্লা, মাহাদী হাসান মুন্না, মোস্তফা আল গালিব, মোঃ রফিকুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ মেসবাহ, মোঃ বনি আমিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল আউয়াল আরও বলেন, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। বর্বর ইসরাইল চাপিয়ে দেওয়া একটি জারজ রাষ্ট্র। ইসরাইলি পণ্য বয়কট নয়, আমদানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের বাজারে ইসরাইল ও তাদের দোসর ভারতের পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাঈল শুধু আজকেই নয় বরং তারা ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপরে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলায় কয়েক লক্ষ মানুষকে তারা শহীদ করেছে। বিশেষ করে বিগত ৭ মাসে ইসরাঈল ফিলিস্তিনের গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে তা অকল্পনীয়। এই ক’মাসেই প্রায় চল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জাসহ কোন স্থাপনায় বাদ যাচ্ছেনা। এই গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। একইসাথে অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলী এই বর্বর হামলা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি জাতিসংঘ, আন্তজার্তিক সংস্থা এবং মুসলিমবিশ্বের মোড়লদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমীর বলেন, সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের গোলামি করছে। সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশের নিরীহ আদম সন্তান হত্যা করছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদটুকু করারও সাহস করছে না। তিনি বলেন, উগ্রবাদি হিন্দুরা ফরিদপুরের মধুখালিতে দুই সহোদর ভারইকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো খুনিরা ধরাছোয়ার বাইরে। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতার লোভে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে বন্ধু বানাতেও কুন্ঠাবোধ করছে না। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে ইসলাম ও মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদিদের সাথে গোপনে আতাত করে চলছে। আমরা মানবতার পক্ষে, মজলুমের পক্ষে, জালেমের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। দেশীয় ও বিদেশী সকল শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম, আছি এবং থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বসন্ত্রাসী ইসরাইলের পণ্য বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসরাইল ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। আল-আকসা সমগ্র উম্মাহর সম্পদ। এটি রক্ষার দায়িত্ব শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়। গোটা মুসলিমবিশ্বকে আল-আকসা রক্ষায় অস্ত্র হাতে মাঠে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। তিনি আরও বলেন, সংসদ নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখান করেছে, উপজেলা নির্বাচনও জনগণ বর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী হলেন বর্জিত প্রধানমন্ত্রী। বর্জিত প্রধানমন্ত্রীকে জনগণ আর এক মুহূর্তের জন্যও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে গণমাধ্যমে নিউজ আসার পর প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে পরোক্ষভাবে সিন্ডিকাটারদের পক্ষাবলম্বন করেছে, অসাধু ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করেছেন।
পরে একটি মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুনাজাতের মাধ্যমে মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।