ডিজনির বহুল প্রতীক্ষিত লাইভ-অ্যাকশন ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র ‘স্নো হোয়াইট’। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ থাককেও লেবাননের প্রেক্ষাগৃহে এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সিনেমাটির ‘ইভিল কুইন’ চরিত্রে ইসরায়েলি অভিনেত্রী গাল গাদতের উপস্থিতিই এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ভ্যারাইটি থেকে জানা যায়, লেবাননের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ আল-হাজ্জার সিনেমাটি নিষিদ্ধ করার আদেশ দেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘর্ষে লেবাননে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম পর্যবেক্ষক সংস্থার পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞা অবশ্য নতুন কিছু নয়। বৈরুতভিত্তিক মিডল ইস্ট ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থা ইতালিয়ান ফিল্মস জানায়, গাল গাদত অনেক আগেই লেবাননের ‘ইসরায়েল বয়কট তালিকায়’ যুক্ত হয়েছেন। ফলে তার অভিনীত কোনো চলচ্চিত্র লেবাননে মুক্তি পায় না।
প্রসঙ্গত, গাল গাদত একজন সাবেক ইসরায়েলি সেনা এবং বরাবরই নিজের দেশের পক্ষে সোচ্চার। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর তিনি ইসরায়েলের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানান। নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি কখনো কল্পনাও করিনি, আমেরিকা ও বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ হামাসের হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন করবে বা উৎসাহিত করবে।” তার এই বক্তব্য সমালচনা ঝড় তৈরি করেছিল। নেটিজেনদের অনেকেই গাল গাদতকে বয়কটের কথা বলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
অন্যদিকে, এর আগেও গাদতের মতো আরেক ইসরায়েলি অভিনেত্রী শিরা হাস অভিনীত মার্ভেলের ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড’ সিনেমাটি একই কারণে লেবাননে নিষিদ্ধ হয়েছিল। লেবাননের বিনোদনজগতে হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষের প্রভাব দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব কনটেন্টে ইসরায়েলি শিল্পীরা যুক্ত, তা দেশটিতে রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার শিকার হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে লেবানন সরকারের দীর্ঘদিনের ইসরায়েলবিরোধী বয়কট নীতি।
সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জনগণের মধ্যে ইসরায়েলবিরোধী আবেগ তীব্রতর হয়েছে, এবং সরকারও চলচ্চিত্র নিষিদ্ধকরণে আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। সব মিলিয়ে, হামাস-ইসরায়েল সংঘর্ষ এখন আর শুধু রাজনীতি বা সীমান্তে সীমাবদ্ধ নয়—তার প্রতিক্রিয়া স্পষ্টভাবে ছড়িয়ে পড়েছে লেবাননের সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতেও।