ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ চলছে ১৫ মাস ধরে। এ যুদ্ধে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধ শেষ করতে মধ্যস্থতাকারীরা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে একটি পর্যায়ক্রমিক চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই আলোচনার বিষয়ে অবগত এক কর্মকর্তা। রোববার থেকে এটি কার্যকর হবে।
চলুন এক নজরে জেনে নেই সেই চুক্তিতে কী কী আছে:
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও চুক্তিতে ছয় সপ্তাহের একটি প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির সময় নির্ধারণ করেছে।
এই চুক্তিতে শর্তের মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ধীরে ধীরে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে প্রত্যেক নারী সেনার বিপরীতে ৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল। এ ছাড়া বাকি বেসামরিক জিম্মিদের প্রত্যেকের বিপরীতে ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
চুক্তির ১৬তম দিনে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। এ সময় গাজায় বন্দি বাকি পুরুষ জিম্মি ও সেনাদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
চুক্তির তৃতীয় ধাপে দীর্ঘমেয়াদি বিষয়গুলো কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সমঝোতা হওয়ার কথা। এর মধ্যে রয়েছে গাজায় বিকল্প সরকার গঠন এবং পুনর্গঠন পরিকল্পনা। এ কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির দুদিন আগেও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৮১ জন নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর ব্যাপারে বদ্ধপরিকর ছিল। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকবার হুমকি দিয়েছেন, ২০ জানুয়ারি তার শপথ গ্রহণের আগে জিম্মি হস্তান্তর চুক্তি না হলে গুরুতর সমস্যা হবে।
এ ছাড়া, জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে গড়ে তোলা ইসরাইলি সংগঠন ‘হোস্টেজস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ও অবিলম্বে জিম্মি বিনিময় চুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিল।
সবদিক থেকে আসা চাপের মুখে গত শনিবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।