করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুসহ সাত শহরে আগামী শনিবার থেকে দশ দিন রাত্রিকালীন কারফিউ চলবে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক সরকারি আদেশ ঘোষণা করেছেন কর্ণাটক রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদিউরাপ্পা।
রাজধানীর বাইরে যে ছয়টি শহর এই কারফিউয়ের আওতায় পড়েছে সেগুলো হলো মাইসুরু, মাঙ্গালুরু, কালাবুরাগি, বিদার, তুমাকুরু এবং উড়ুপি-মানিপাল। সরকারি আদেশ অনুযায়ী আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত জারি থাকবে কারফিউ।
বৃহস্পতিবারের আদেশে মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদিউরাপ্পা আগামী ১০ দিন কারফিউ চলাকালে জনসাধারণকে ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে খুব জরুরি প্রয়োজন বা যৌক্তিক কারণকে কারফিউয়ের বাইরে রাখা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ভারত জুড়েই দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যে যে দশটি রাজ্যে সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম কর্ণাটক। বাকি নয়টি রাজ্য হলো— মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, মধ্য প্রদেশ, তামিলনাড়ু, গুজরাট, কেরালা ও পাঞ্জাব। শনিবার একদিনে ভারতে যে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ সংক্রমণ ঘটেছে এই দশটি রাজ্যে।
কর্ণাটকে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত কিছুদিন ধরেই রাজ্যটিতে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতের সবগুলো রাজ্যের পাশাপাশি কর্ণাটকেও শুরু হয়েছে গণটিকাদান কর্মসূচী। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত কর্ণাটকে ৫০ লাখেরও বেশি টিকার ডোজ ব্যবহৃত হয়েছে।
গতবছর করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর সেপ্টেম্বরের দিকে দেখা গিয়েছিল সর্বোচ্চ সংক্রমণ। ওই মাসে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল ৯৮ হাজার।
তারপর থেকে ক্রমশ নিম্নমুখী হওয়া শুরু করে সংক্রমণের রেখচিত্র। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ দৈনিক সংক্রমণ নেমে আসে ১৫ হাজারেরও নিচে।
তবে তা আবার বাড়তে শুরু করে মার্চের মাঝামাঝি থেকে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার, যা একদিনের হিসেবে সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ওয়েবসাইট করোনা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে ভারত। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫৪ জন এবং এ রোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯৪ জন।