বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা যুদ্ধ। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে টিকা নিয়ে চলছে তোড়জোড়। এমন সময়ে মরণব্যাধী এইচআইভি ভাইরাস বা এইডস রোগের টিকা আবিষ্কার নিয়ে আশার আলো দেখালেন গবেষকরা।
দীর্ঘ ৩০ বছরের চেষ্টার পর বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির টিকা তৈরির পথে অনেকটা এগিয়ে গেলেন। তারা শিগগিরই মানুষকে এইচআইভি ভাইরাসের একটি প্রতিষেধক টিকা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
টিকা আবিষ্কারের এই পদক্ষেপটি এখনও প্রাথমিক অবস্থায় আছে। বর্তমানে টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। টিকাটি নিয়ে কাজ করছে ক্যালিফোর্নিয়ার ইন্টারন্যাশনাল এইডস ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড দি স্ক্র্যাপস রিসার্চ ইন্সটিটিউট ইন লা জোলা।
‘যদিও গবেষণাটি এখনও একেবারেই প্রাথমিক অবস্থায়। তবু এটি আমাদের আশাবাদী করছে,’ বলছিলেন ন্যাশভিল ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষেধক ঔষধ ও সংক্রামক রোগ বিষয়ক অধ্যাপক ডা. উইলিয়াম স্কাফনার। যদিও তিনি টিকাটির ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত নন।
এই চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের মতে, টিকা পেতে আমাদের আরও দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। কারণ এইচআইভির টিকা আবিষ্কারে অন্য সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
ডা. স্কাফনার বলেন, ‘অবশ্যই এটি বড় একটি উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা, যে টিকার উন্নয়ন আগে কেউ করতে পারেনি।’ তিনি এই টিকা প্রযুক্তিটিকে ২১শতকের বিজ্ঞানের চূড়ান্ত সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
ইন্টারন্যাশনাল এইডস ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড দি স্ক্র্যাপস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষকরা আশা করছেন, তারা যে টিকাটির উন্নয়ন করছেন সেটি মানুষের দেহে ব্যাপকভাবে এন্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হবে। টিকাটি এইচআইভি ভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের বিরুদ্ধেও এন্টিবডি তৈরি করতে পারবে এমনটিই দাবি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ডা. মার্ক ফ্রেইবার্গ পিএইচডি’র।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে ট্রায়ালের অংশ হিসেবে সুস্থ ও প্রাপ্ত বয়স্ক ৪৮ জনের দেহে দুই মাসের ব্যবধানে টিকাটির দুটি ডোজ প্রয়োগ করেছে। টিকাগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৭ শতাংশের দেহে টিকাটি এন্টিবডি তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।
এইচআইভি ভাইরাস ১৯৮০ সাথে প্রথম ছড়াতে শুরু করে বলে জানা যায়।এটি মানুষের দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এইচআইভি সংক্রমণের ফলে অন্যান্য রোগ যেমন-নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস এমনকি ক্যানসারও হতে পারে। এইচআইভি সংক্রমণের পরের ধাপকে এইডস বলা হয়।