প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু লোক মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে তৈরি করা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর হাতুড়ি-শাবল দিয়েছে ভেঙে তা মিডিয়ায় প্রচার করেছে। যারা ঘর ভেঙেছে তাদের নামের তালিকাসহ তদন্ত প্রতিবেদন হাতে রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো যখন সিদ্ধান্ত নিলাম প্রত্যেকটা মানুষকে আমরা ঘর করে দেব। কিন্তু দেশের কিছু মানুষ এত জঘন্য চরিত্রের, কয়েকটা জায়গায় হঠাৎ দেখলাম‑ ঘর ভেঙে পড়ছে, কোনো কোনো জায়গায় ভাঙা। এসব দেখার পরে সার্ভে করালাম কোথায় কী হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এর মধ্যে ৩০০টা ঘর ভেঙেছে। বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ গিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে সেগুলো ভেঙে মিডিয়ায় সেগুলোর ছবি তুলে দিচ্ছে। তাদের নাম-ধাম অনুসন্ধান চালিয়ে বের করা হয়েছে। আমার কাছে পুরো রিপোর্টটা আছে। গরিবের জন্য করে দেওয়া ঘর কারা এইভাবে ভাঙতে পারে, ছবিগুলো দেখলে বুঝা যায়।’
ঘর ভেঙে পড়ার পেছনের কারণ মিডিয়া অনুসন্ধান করেনি অভিযোগ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘মিডিয়া এগুলো ধারণ করে প্রচার করে। কিন্তু তারা এটা কীভাবে হলো সেটা বের করে আনে না।’
তদন্তে ৯টি জায়গায় দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েকটা জায়গায় দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছি। যেমন এক জায়গায় ৬০০ ঘর, সেখানে প্রবল বৃষ্টিতে মাটি ধসে ৩-৪টা ঘর নষ্ট হয়েছে। মাত্র ৯টা জায়গায় কিছুটা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ঘর নির্মাণে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। যাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলাম ইউএনও-ডিসিসহ সমস্ত কর্মচারীরা, অনেকে নিজেরা এগিয়ে এসেছে এই ঘরগুলো তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘যারা ইট তৈরি করে তারাও এগিয়ে এসেছে, অল্প পয়সায় তারা ইট দিয়েছে। এভাবে সবাই সহযোগিতা করেছে, আন্তরিকতা দেখিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে কিছু দুষ্টু বুদ্ধির লোক আছে‑ এটাই হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টকর। যখন এটা গরিবের ঘর তারা সেখানে হাত দেয় কিভাবে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সংগঠন থাকায় করোনা মহামারির ভয়াবহতা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের আরও সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাই হোক আমরা সেগুলো মোকাবিলা করেছি। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে আরও সর্তক থাকা দরকার।’
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এ সভা সাড়ে ১০টায় শুরু হয়ে চলে সোয়া ১২টা পর্যন্ত। এতে অর্ধশত নেতা উপস্থিত ছিলেন।