কিশোর বয়সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিন এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘নেতাজী ও বঙ্গবন্ধু: ভারতবর্ষের বৃটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক ওয়েবমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপুমনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
ডা. দীপু মনি বলেন, উপমহাদেশে মানব মুক্তির জন্য যে মহান মানুষরা সংগ্রাম করেছেন তাদের মধ্যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু এবং বঙ্গবন্ধুর নাম সর্বাগ্রে আসে। নেতাজি ঔপনিবেশিক শাসন শোষণের কবল থেকে ভারতবর্ষের মানুষকে মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিলেন, একইভাবে বঙ্গবন্ধুও বেনিয়া এবং হানাদার পাকিস্তানি শাসকদের কবল থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র জনযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ে অন্তত তিনবার নেতাজির কথা বলেছেন। অর্থাৎ কিশোর বয়সেই বঙ্গবন্ধু নেতাজির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে মহাত্মা গান্ধী অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে বিশ্বাস করতেন, নেতাজী বেছে নিয়েছিলেন সশস্ত্র সংগ্রামের পথ। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য সাফল্যের সঙ্গে মহাত্মা গান্ধী ও নেতাজীর দুই ধারার সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন। এ দুইজন মহান নেতার জীবন ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। মানব মুক্তির পথ আরও প্রশস্ত করতে হবে।
ওয়েবমিনারে বাংলাদেশে নিয়োজিত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনস্বীকার্য ক্যারিশমা এবং তাদের ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তা যুগ যুগ ধরে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে। নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিল।
ওয়েবমিনারে আরও আলোচনা করেন, এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর শৈশবের বন্ধু অধ্যাপক ক্ষেত্রেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র অধ্যাপক মহেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মুখার্জি তদন্ত কমিশনের অন্যতম সাক্ষী ও কলকাতা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নন্দলাল চক্রবর্তী, নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজের গবেষক ও কলকাতার শ্রী শিক্ষায়তন কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মৈত্রেয়ী সেনগুপ্ত, নির্মূল কমিটির সহ সভাপতি ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের অন্যতম অধিনায়ক লোকমান খান শেরওয়ানীর পৌত্রী শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম ও নির্মূল কমিটি যশোর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সাজেদ রহমান প্রমুখ।