অনলাইন ডেস্কঃ২০১৯-২০ অর্থ-বছরের জন্য ৮৬৫ কোটি ৫৪ লাখ ৩ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট আজ ঘোষণা করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৬৩৭ কোটি ৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। পরে তা সংশোধিত আকারে দাঁড়িয়েছে ২৯৮ কোটি ৮৩ কোটি ১৪ হাজার টাকা। যার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার শতকরা ৪৬ দশমিক ৯০ ভাগ। তবে পূর্বের অর্থ-বছরের তুলনায় এবার বাজেটের আকার বাড়ছে।
কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নানা পরিকল্পনা নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ২০১৯-২০ অর্থ-বছরের বাজেট প্রস্তুতির কাজ শেষ হয়েছে। আজ এ বাজেট ঘোষণা করবে কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এবারে কেসিসি’র সম্ভাব্য প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৬৫ কোটি ৫৪ লাখ ৩ হাজার টাকা। রাজস্ব ব্যয় ১৬৯ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার টাকা, সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা হতে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৫ কোটি ৭১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। নিম্নে এ বাজেটের আয়-ব্যয়ের খাত বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
আয়ের খাত : বাজেটের রাজস্ব খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৬৯ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। উন্নয়ন তহবিল থেকে আয় ধরা হয়েছে ৬০৯ কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার। এর মধ্যে সরকারি অনুদান (২য় অংশ) অর্থাৎ বার্ষিক উন্নয়ন কমসূচি (এডিপি), বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বিশেষ থোক ও জাতীয় এডিপিভুক্ত/প্রস্তাবিত প্রকল্পে সরকারি থেকে ৪৭৪ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। বিশেষ প্রকল্প (৩য় অংশ) প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভলপমেন্ট অর্থায়ন ফান্ড প্রকল্প, নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প-২, নিরাপদ পথ খাবার উন্নয়ন কর্মসূচি, আরবান পাবলিক এন্ড এনভারমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রকল্প, সিটি ওয়ার্ড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন এনভারমেন্ট ইন খুলনা, আরবান ম্যানেজমেন্ট অব মাইগ্রেশন ডিউ টু ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ ইন খুলনা সিটি কর্পোরেশন, সোলার স্ট্রীট লাইট প্রকল্প ও খালিশপুর কলেজিয়েট স্কুল নির্মাণ প্রকল্প, এনগেজিংমাল্টি সেক্টরাল পাটনার্স ফর ক্রিয়েটিং অপরচুনিটিজ ইমপ্র“ভিং ওয়েলবিয়িং এন্ড রিলিজিং রাইটস অব দিআরবান পুওর প্রজেক্ট, শিশু রিচপনসীভ কার্যক্রম শহরের ভিতরে টেকসই উন্নয়ন, লাইভস্টক ডেভলপমেন্ট বেজ ডেইরি রেভুলেশন এন্ড মিট প্রোডাকশন প্রকল্প থেকে ১৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এছাড়া প্রারাম্ভিক স্থিতি রয়েছে ৮৬ কোটি ৫১ লাখ ৫ হাজার টাকা।
ব্যয়ের খাত : সংস্থাপনসহ রাজস্ব তহবিলে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৯ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। উন্নয়ন তহবিল সরকারি অনুদান (২য় অংশ) অর্থাৎ নগরীর বিভিন্ন রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামোগত সুবিধাধীন উন্নয়ন প্রকল্প ও বিশেষ প্রকল্প (৩য় অংশ) ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে এবার বাজেটে সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে ও ব্যয় সংকোচন করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য রাজস্ব খাত থেকে ৬১ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। উন্নয়নমূলক কাজ রক্ষণাবেক্ষণে রাজস্ব তহবিল থেকে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। টুটপাড়া তালতলা মাতৃসদন হাসপাতাল পরিচালনাসহ স্বাস্থ্যখাতে ৪ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা, মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও মশক নিধনে কঞ্জারভেন্সিখাতে ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উন্নয়ন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। উক্ত থোক বরাদ্দ পূর্তখাতে ৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ভেটেনারী খাতে ২৫ লাখ, জনস্বাস্থ্যখাতে ১০ কোটি ৪০ লাখ, কঞ্জারভেন্সিখাতে ১৬ কোটি ৫৯ লাখ, সাবমার্সিবল পাম্পে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জাতীয় এডিপিতে দু’টি প্রকল্পে ৪০২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে কর্পোরেশনের জনগুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়নে ১৮৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে ২১৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৫ কোটি, বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভলপমেন্ট অর্থায়ন ফান্ড প্রকল্পে ৬৩ কোটি ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর ৩০ কোটি, নিরাপদ পথ খাবার উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৪ লাখ, আরবান পাবলিক এন্ড এনভারমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রকল্পে ৯০ লাখ, সিটি ওয়ার্ড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন এনভারমেন্ট ইন খুলনা প্রকল্পে ২০ লাখ, আরবান ম্যানেজমেন্ট অব মাইগ্রেশন ডিউ টু ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ ইন খুলনা সিটি কর্পোরেশন প্রকল্পে ২০ লাখ, এনগেজিংমাল্টি সেক্টরাল পাটনার্স ফর ক্রিয়েটিং অপরচুনিটিজ ইমপ্র“ভিং ওয়েলবিয়িং এন্ড রিলিজিং রাইটস অব দিআরবান পুওর প্রজেক্ট-এ ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, শিশু রিচপনসীভ কার্যক্রম শহরের ভিতরে টেকসই উন্নয়নে ১ কোটি ৯০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও লাইভস্টক ডেভলপমেন্ট বেজ ডেইরি রেভুলেশন এন্ড মিট প্রোডাকশন প্রকল্পে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
কর্পোরেশনের বাজেট কাম একাউন্টস অফিসার এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, এবার বাজেটে নতুন কর-আরোপ করা হয়নি। নাগরিক সেবা সম্প্রসারণ, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, জেঙ্গু ও চিকুন গুনিয়াসহ স্বাস্থ্যখাত, জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। এবারের বাজেট হবে সুষম ও উন্নয়নমুখী। এর সুদূর প্রসারী তাৎপর্য রয়েছে। তাই নতুন বাজেট শতকরা ৮০ ভাগ বাস্তবায়ন হবে বলে তার প্রত্যাশা।