চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করায় পুলিশের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাহিরপুর উপজেলা বাস্তুহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। তাঁর দাবি, পুলিশ বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে হয়রানি ও হুমকি দিয়ে এসেছে। গত মঙ্গলবার তাহিরপুর থানার ওসি তাঁকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়েছেন। পরদিন তিনি বিষয়টি দুদককে জানিয়েছেন।
মিজান ফোন করে তাঁর পরিচিত কয়েকজন সাংবাদিককে এসব বিষয় জানিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন মহলকেও হুমকির বিষয়টি জানিয়েছেন। এ ছাড়া লিখিতভাবে পুলিশের নিরাপত্তা সেলকে জানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
বাস্তুহারা লীগ নেতা মিজান তাহিরপুর উপজেলার লাকমা নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। সে কারণে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।
তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম আসায় তাঁর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত ও সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, উপজেলা বাস্তুহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান গত ৩ ও ১৩ অক্টোবর সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে যুবলীগের নেতা পরিচয় দেওয়া ঠিকাদার জি কে শামীম গ্রেপ্তারের পর আলোচনায় আসে মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নাম।
মিজানুর রহমান অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমপির বিরুদ্ধে প্রথম দফায় অভিযোগ করার পর আমার বাসায় পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছেন ওসি। গত মঙ্গলবার আমি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম পুলিশ কেন নদীতে চাঁদাবাজি করে এবং তাহিরপুরের নদী খননের মাটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে মিলে বিক্রি করছে। এ কথা বলার পর ওসি আমাকে বলেছেন, তুই বেশি বাইড়া গেছত। তরে ক্রসফায়ার দিয়া মাইরা ফালামু।’
মিজানুর বলেন, ‘এই ফোনের পরেই আমি সাথে সাথে এসপিকে বলছি।’
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তাহিরপুর থানার ওসি একজন ব্যক্তিকে ক্রসফয়ারের হুমকি দিয়েছেন—এমন খবর পত্রিকায় দেখেছি। আমি ওসির কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, তিনি ওই ব্যক্তিকে চিনেন না।’
এসপি বলেন, ‘এক দিন ফোন করে ওসি ও আমাকে নদীতে চাঁদাবাজির বিষয়ে কথা বলেছিলেন ওই ব্যক্তি (মিজানুর রহমান। ক্রসফায়ারের হুমকির বিষয়টি আমার জানা নেই।’
তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি। থানায় ব্যবহৃত তাঁর মোবাইল ফোনে কল করলে আমির হোসেন নামের এক উপপরিদর্শক (এসআই) ধরে বলেন, ‘স্যার ছুটিতে আছেন।’