জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সব পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান সেসময় এ তথ্য জানান সংবাদ মাধ্যমে জানান। সেদিনই দুপুরে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা বন্ধের কথা জানিয়েছিলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা, মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
পরের দিন, বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টা থেকে আবারো তারা নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেয়। রাস্তায় যান চলাচলও বন্ধ করে দেয় আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা। সেসময় তারা পরীক্ষা নিয়ে টালবাহানা, চলবে না, চলবে না’,‘চলমান পরীক্ষা নিতে হবে নিতে হবে,‘সাত কলেজের পরীক্ষা নিতে হবে নিয়ে নাও,’ ‘ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা নিতে হবে নিতে,’ ‘দাবি মোদের একটাই-মার্চে হল-ক্যাম্পাস খোলা চাই,’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের কারণে ব্যস্ততম নীলক্ষেতে প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে, রাস্তায় দিনভর ছিল অসহনীয় যানজট। সাধারণ মানুষজনকে অসহনীয় দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দাবির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দুপুরে জরুরি সভায় বসেন।
ভার্চুয়াল এ সভায় যুক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রো-ভিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়কসহ সাত কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, সাত কলেজের চলমান পরীক্ষাগুলো অব্যাহত থাকবে। ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষাগুলোর তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এমন সংবাদে নীলক্ষেতে সাত কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ ,উৎসবে পরিণত হয়। তারা করতালি দিয়ে স্বাগত জানান সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে। আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা সেখানে দায়িত্বরত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে লাল গোলাপ তুলে দেন। পরে হাসিমুখে ছাত্র-ছাত্রীরা ঘরে ফিরে গেলে, সন্ধ্যার আগেই নীলক্ষেতের প্রধান রাস্তায় স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসে। শুরু হয় যানবাহন চলচাল।
করোনার কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ আছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে আনার্স চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয় ডিসেম্বর থেকে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঘোষণা দেন আগামী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে।