খালিশপুর থানা এলাকার গৃহবধু হাসিনা খাতুন হত্যা মামলায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মো: গোলাম মোস্তফা। বুধবার তিনি খুলনা সিএমএম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
তিনি জানান, ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল মো: মানিক শেখ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে হাসিনা খাতুনকে বিয়ে করে। তারা উভয়ে খালিশপুর থানাধীন গোয়ালখালী এলকার জনৈক রবিউল আওয়ালের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করে। মানিক শেখ ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। বিয়ের পর থেকে উভয়ের মধ্যে পারিবারিক কলহ প্রায়ই লেগে থাকত। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরের জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ তাদের মধ্যে আবারও পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়।
১৮ জানুয়ারি সকাল ৭ টার দিকে মানিক শেখ ইজিবাইক চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে দুপুরে বাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফিরতে তার দেরী হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে স্ত্রী হাসিনা খাতুনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে মানিক শেখ। একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্য বাকবিতান্ড হয়। মানিক ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে খাট থেকে ফেলে দেয়। বিকেল ৫ টার দিকে বালিশ দিয়ে চেপে শ্বাসরোধ করে হাসিনাকে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করে আবারও সে ইজিবাইক চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। হত্যার পর মানিক আর ওই বাড়িতে ফিরে যায়নি।
পাশের ঘরের এক মাহিলা সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখে কাথা গায়ে দিয়ে হাসিনা ঘুমিয়ে আছে। সকাল পার হয়ে বিকেল হয় কিন্তু তার সাড়া না পেয়ে বাড়ির মালিককে জানায়। বাড়ির মালিক পুলিশকে জানালে ঘরের দরজা ভেঙ্গে হাসিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নিহতের পিতা মো: মোজ্জাফর মোল্লা হত্যাকান্ডের দু’দিন পর মানিক শেখের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন, যার নং ১৭।
হত্যাকান্ডের দু’দিন পর নগরীর সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে মানিক শেখকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাত্যার কারণ জনিয়ে পুলিশের নিকট জবানবন্দি দেয়। এরপরের দিন আদালতে নিহতের স্বামী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।