যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সোমবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়াপূর্ব আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. মক্কা বিজয়ের পর মুশরিকদের মনে আতঙ্ক কাজ করছিল, বিজয়ী বীর মুহাম্মদ সা. তাঁদের সঙ্গে কেমন আচরণ করবেন এবং কীভাবে প্রতিশোধ নেবেন তা ভেবে। কিন্তু রাসূল সা. কারো ওপর কোনো প্রতিশোধ নিলেন না। সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন। মহানবী সা. ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি নিরস্ত্র অবস্থায় নিজ গৃহে বসে থাকবে, যে ব্যক্তি কাবাঘরে আশ্রয় নেবে অথবা যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ।’ সুতরাং রাসূল সা. এর জীবনী থেকে আমাদের মহানুভবতার শিক্ষা নিতে হবে। প্রতিশোধ পরায়ণ হওয়া যাবে না।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের ফলে আমরা এক নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অনেকেই প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি খুলনায় মহানবী সা. কে কটূক্তিকে কেন্দ্র করেও বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের সচেতন হয়ে এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিজেদের ধৈর্য্যশীল হতে হবে। সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। মহানবী সা. এর জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁর আদর্শ ধারণ করে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।
প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, মহানবী সা. বলেছেন- আমাদের সব সময় প্রতিবেশীর সাথে ভাল আচরণ করা উচিত। সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট বন্যায় দুর্গতদের পাশে যেভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়েছেন এটাকে আমি মনে করি রাসূল সা. এর শিক্ষা। আমাদের সব সময় এমন থাকতে হবে। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসতে হবে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুসের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান। মহানবী সা. এর জীবনীর উল্লেখ্যযোগ্য দিক নিয়ে আলোচনা ও পরে দোয়া পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি আব্দুল কুদ্দুস।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আগত মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে চলতি রবিউল আউয়াল মাসের মধ্যে হামদ্-নাত ও কেরাত প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে।