খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা বুধবার (২০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের (বিএসি) আয়োজনে ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির সহযোগিতায় সকাল ৯.৩০ মিনিটে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, দেশে উচ্চশিক্ষার গুণগতমান উন্নত করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অগ্রসর হতে হবে। এজন্য উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে কাজগুলো করে, সেই কাঠামো ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা যে কোয়ালিটি এডুকেশনের কথা বলছি তা আপনারা ধারণ করুন, গ্রহণ করুন। তাতে শিক্ষার গুণগতমান উন্নত হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের যেভাবে শিক্ষা দিচ্ছি, তার মান যথাযথ পর্যায়ে আশানুরূপ হচ্ছে না। এজন্য আমাদের আরও কাজ করা দরকার। এক্ষেত্রে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করতে হবে। বিশ্ব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার হচ্ছে। আমরা পিছিয়ে গেলে উন্নত বিশ্ব থেকে ছিটকে পড়বো। তাই শিক্ষার গুণগতমান উন্নত করতে আমাদের অ্যাক্রেডিটেশন অর্জন করতে হবে। এটি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষা মানুষের অবস্থার উন্নতি করে ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ঘটায়। গবেষণায় যারা উন্নতি লাভ করে তারা জাতি হিসেবেও উন্নত স্থানে। এজন্য আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। সিলেবাসে একটা মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে। ওবিই কারিকুলার বাস্তবায়ন করতে হবে। শিখতে হবে সোশ্যাল, পারসোনাল ও ফান্ডামেন্টাল ডোমেইনে। শিক্ষার্থীদের স্কিল লার্ন করতে হবে। মানসিকতা তৈরি করতে হবে। সে যেন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে শিক্ষা ব্যবস্থায় সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের মাধ্যমে দেশে কোয়ালিটি এডুকেশনের নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন শিক্ষক একাডেমিক অডিটর হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমি নিজেও একজন কোয়ালিটি এডুকেশন এক্সপার্ট। আমরা যে ওবিই কারিকুলা বাস্তবায়ন করছি, সেটাও বিএসির গাইডলাইন অনুসরণ করে করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়নে অ্যাক্রেডিটেশন প্রয়োজনীয় ও জরুরি বিষয়। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এর কোনো বিকল্প নেই। বিদেশে পড়তে গেলে সাবজেক্টের অ্যাক্রেডিটেশন আছে কি না সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। এজন্য বিএসির উচিত অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা। কারণ, জাতীয় শিক্ষা নীতিমালা ও ওবিই কারিকুলার সুফল পেতে আমাদের এটি দরকার।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পূর্ণকালীন সদস্য প্রফেসর ড. এস এম কবীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলের সচিব প্রফেসর এ.কে.এম. মুনিরুল ইসলাম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (অ্যাক্রেডিটেশন) প্রফেসর নাসির উদ্দিন আহম্মেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপপরিচালক (অ্যাক্রেডিটেশন) ড. রিতা পারভীন।
এ কর্মশালায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা অঞ্চলের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, আইকিউএসির পরিচালক-অতিরিক্ত পরিচালক, ১১ কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ও প্রতিনিধি এবং ৪টি মাদ্রাসার প্রতিনিধিবৃন্দসহ খুলনার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে টেকনিক্যাল সেশনে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স এন্ড অ্যাক্রেডিটেশন ইন হায়ার এডুকেশন শীর্ষক সেশন পরিচালনা করেন অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পূর্ণকালীন সদস্য প্রফেসর ড. এস এম কবীর। পরে মুক্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। মুক্ত আলোচনা পর্বে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।