খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এপিএ’র আওতায় আবশ্যকীয় কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেবাপ্রদান প্রতিশ্রুতি বিষয়ে অংশীজনের (স্টেকহোল্ডার) সমন্বয়ে অবহিতকরণ সভা বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় হবে দেশের মধ্যে রিসার্চ ফোকাসড ইউনিভার্সিটি। এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণাও আরেকটি অঙ্গ হবে। এজন্য রিসার্চ স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান, একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। অতীতের তুলনায় এখন বেশি পরিমাণে বাজেট বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। যার ফলস্বরূপ গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যাও বেড়েছে। গত বছর ১২৬৬টি গবেষণা নিবন্ধ দেশ-বিদেশের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একটি রিসার্চ ফোকাসড ইউনিভার্সিটি গড়ে তুলতে যেসব প্রক্রিয়া দরকার তা শুরু হয়েছে। এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুপাত ১:১২ যা বিশ্বমানের।
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এখন পরিবর্তনের ধারার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। এজন্য এখানকার শিক্ষাদান পদ্ধতিসহ সবকিছু বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মিল রেখে করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, ফলাফল প্রকাশ অনলাইনে হচ্ছে। এখন আমরা ই-সার্টিফিকেট প্রদানের একটি পরিকল্পনা নিতে আগ্রহী। এর পাশাপাশি মাস্টার্সের এডমিশনও অনলাইনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাসে পর্যায়ক্রমে ফ্রি ওয়াই-ফাই জোনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুম ও আবাসন সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অতীতের তুলনায় ২-৩ বছরে ভৌত অবকাঠামোর কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেবা উন্নত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে স্মার্ট কার্ড চালু করা হয়েছে। এছাড়া উপাচার্য সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্পের আওতায় হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যাকবোন, সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স সিস্টেম স্থাপন এবং আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি করার উদ্যোগের বিষয়ও অবহিত করেন।
সভায় উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ এ অঞ্চলের মানুষের ত্যাগ-তিতীক্ষার কথা স্মরণ এবং তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ও এপিএ টিম লিডার প্রফেসর ড. উত্তম কুমার মজুমদার। সভায় সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ২০২৩-২৪ সম্পর্কিত প্রেজেন্টেশন পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির ফোকাল পয়েন্ট উপ-রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন-৩) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সভায় মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না, কেসিসি উইমেন্স কলেজের শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন, ঠিকাদার প্রতিনিধি মো. আব্দুল আলীম, আইসিটি সেলের প্রোগ্রামার মো. ফারুক হোসেন, অভিভাবক প্রতিনিধি শেখ রেজওয়ান হোসেন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রেজওয়ান আহম্মেদ, অর্পা আফরিন মিম ও মো. জাহিদ হাসান। সভা সঞ্চালনা করেন সংস্থাপন-১ শাখার সেকশন অফিসার সোনিয়া আক্তার। সভায় এপিএ’র বিভিন্ন কমিটির সদস্য, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।