অনলাইন ডেস্কঃমারামারি ঘটনায় একে অপরকে আঘাত। ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত আঘাতে জখমের পরিমাণ গুরুতর হয়ে পড়ে। যার ফলে মামলা এবং পর্যায়ক্রমে আদালতের রায়ে জেল, জরিমানাতো আছেই। এভাবেই ছোট ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে বছরের পর কারাগারে থাকা কয়েদির সংখ্যা কম নয়। তবে খুবই কম কয়েদিরই সুযোগ হয় বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তি পেয়ে তার পরিবারের কাছে যাওয়া। আর তাও যদি হয় ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে। এমনই দু’জন সৌভাগ্যমান হল খুলনা জেলা কারাগারের কয়েদি শফিকুল মোল্লা (৩৪) এবং জাভেদ (৩৯)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এই দুই কয়েদিকে বিশেষ ক্ষমতাবলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তির জন্য অপেক্ষায় ছিল জেলগেটে তাদের আত্মীয়স্বজন। তাদের সবারই চোখে ছিল আনন্দের কান্না। কারণ সরকারের স্বদিচ্ছায় ঠিক ঈদের আগ মুহূর্তে মুক্তি মেলায় স্বজনরা সকলেই খুশি।
জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে লঘু অপরাধে দণ্ডিত অর্ধেকের বেশি সাজাভোগকৃত কয়েদিদের মুক্তি প্রদানের লক্ষে ফৌজদারী কার্যবিধি ৪০১ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সারাদেশ থেকে ৯ কয়েদিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর মধ্যে খুলনা জেলা কারাগার থেকে ২ জন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২ জন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১ জন, কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ১ জন, নাটোর জেলা কারাগার থেকে ১ জন, নেত্রকোনা জেলা কারাগার থেকে ১ জন এবং কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১ জন করে মুক্তি পাবেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল খুলনা জেলা কারাগার থেকে ২ জন কয়েদি মুক্তি পেয়েছেন।
খুলনা জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, কয়েদি নং- ২৮১১/এ, শফিকুল মোল্লা নগরীর খানজাহান আলী থানার ৮নং যোগীপোল এলাকার রফিক মোল্লার ছেলে। একটি মারামারির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরবর্তীতে তার ৩ বছর ৬ মাসের সাজা, ৬ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১৫ দিন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। শফিকুল ২০১৭ সালের ১নভেম্বর থেকে কারাগারে ছিল। অপর কয়েদি নং-২৯৬২/এ, জাভেদ নগরীর খালিশপুর থানা এলাকার ৭৭ হাউজিংয়ের সাব্বিরের ছেলে। তার বিরুদ্ধেও মারামারি মামলা ছিল। আদালত তাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৩ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ১ মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল। সে ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর থেকে কারাগারে ছিল।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা কারাগারের জেলার মোঃ জান্নাত-উল-ফরহাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ-সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে সারাদেশ থেকে ঈদের আগে ৯ কয়েদিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে খুলনায় রয়েছেন ২ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেল সুপার কামরুল ইসলামের উপস্থিতিতে শফিকুল এবং জাভেদকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, লঘু অপরাধের ভিত্তির ওপর বিবেচনা করে খুলনা থেকে একটি টিম যাচাই বাছাই শেষে একাধিক কয়েদির মধ্যে থেকে এই দুই কয়েদির মুক্তি দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। যাচাই-বাছাই টিমে ছিলেন জেলা প্রশাসক, জেল সুপার, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিভিল সার্জন, একজন পিপি এবং সমাজ সেবা কর্মকর্তা।