খুলনা অফিসঃখুলনা-মোংলা নির্মাণাধীন রেললাইন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে বাগেরহাট অংশে অধিগ্রহনের দুর্ণীতির সাথে জরিত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলেও খুলনা অংশের অধিগ্রহনের দুর্ণীতির হোতা বিজয় কুমার সিংহ রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে । বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ শাখার অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা নিত্য গোপাল ও কানুনগো সুব্রত সরদার এবং তৎকালীন সার্ভেয়ার বর্তমানে রামপাল উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত সার্ভেয়ার কামাল হোসেনকে বরখাস্ত আদেশের জারি করা হয় । এর মাধ্যমে প্রমানিত যে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ভুমি অধিগ্রহনে দুর্ণীতি হয়েছে । ঠিক তেমনি খুলনা অংশের চক হাসান খালী,চক মথুরাবাদসহ অধিগ্রহনকৃত অধিকাংশ মৌজায় দুর্ণীতির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন খুলনা অংশের অতিরিক্ত ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা বিজয় কুমার সিংহ রায়,উচ্চমান সহকারী জিএম আজিবুর রহমান,মিজানুর রহমান,মোকলেছুর রহমান,মোতালেব হোসেন,আলী আফজাল খাঁন,কোরবান আলী ও আনিসুর রহমান,লিমা মল্লিক,প্রসেস সার্ভার সোবাহান,সাইফুল ইসলাম,স্বপন চন্দ্র ধর,মাহামুদ হোসেন,এলপিআর ভোগরত আঃ গফফার,আঃরউফ,নির্মল,মারুফ রহমান, শেখ এসকেন্দার আলীসহ অধিগ্রহন সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা ।প্রসেস সার্ভারদের মধ্যে বিজয় কুমার সিংহ রায়ের সাথে এলপি আরে যাওয়া সার্ভার নির্মল ও স্বপন চন্দ্র ধরের ছিলো গোপন লেনদেনের সখ্যতা ।
ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা বিজয় কুমার সিংহ রায় খুলনা থেকে বদলী হয়ে কক্সবাজারে চলে গেছেন । বিজয় কুমার সিংহ প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবার অফিস করেন । খুলনা অংশের অতিরিক্ত ভুমি অধিগ্রহনে প্রায় শতকোটি টাকা লোপাটকারী বিজয়ের নিজ জেলা ঠাকুরগাও রয়েছে বিশাল ভুসম্পতি ও ঢাকা শহরে নামে বেনামে রয়েছে কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি ও ফ্লাট । সুচতুর এ কর্মকর্তা দুর্ণীতি থেকে রেহাই পেতেই উপর লেভেলে তত্ববীর করে কক্সবাজারে বদলী হন । এ ব্যাপারে তার সাথে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজি নন । মানবাধিকার সংগঠক মঞ্জুর হোসেন বলেন,বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে আন্তরিক । তার সেই আন্তরিকতায় উদাহরন খুলনাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের খুলনা-মোংলা নির্মাণাধীন রেললাইন প্রকল্প । ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের ভুমি অধিগ্রহনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ বাগেরহাট অংশের কর্মকর্তাদের বরখাস্থ করা হয়েছে এটা অবশ্য ভুমি মন্ত্রনালয়ের দুর্ণীতি বিরোধী অভিযানের মাননীয় মন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন তার বাস্তব নির্দশন । আমরা দুর্ণীতিকে নিন্দা জানাই পাশাপাশী খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পে খুলনা অংশের অতিরিক্ত ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা বিজয় কুমার সিংহ রায়সহ যারাই দুর্ণীতির মাধ্যমে সরকারে টাকা পকেটস্থ করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক চকরী হতে বরখাস্থ ও তাদের জ্ঞাত আয় বহিভুত সম্পদ সরকারের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হউক ।
প্রসঙ্গত, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সরকার খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। খুলনা-মোংলা নির্মাণাধীন রেললাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরমধ্যে রেললাইনে ব্যয় হবে এক হাজার ১৪৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, ব্রিজের জন্য এক হাজার ৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ও জমি অধিগ্রহণে এক হাজার আট কোটি টাকা । এর মধ্যে খুলনা অংশে ৪০১ একর ভুমি অধিগ্রহন করা হয় । এতে সরকারের ব্যায় হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা । আর চারশ কোটি টাকা হতে প্রতি লক্ষে দশ হাজার এবং ক্ষেত্র বিশেষ প্রতিলক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিজয় কুমার সিংহ রায় ও খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার সহযোগিরা । এ অধিগ্রহনের ফলে খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ । দুর্ণীতি দমন কমিশন তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিরাল ।