সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত এবং হস্তান্তরিত হয়ে খুলনা রেঞ্জে আগত পুলিশ সদস্যদের ব্যতিক্রমী পদায়ন করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে লটারির মাধ্যমে তাদের প্রত্যেকের কর্মস্থল নির্ধারণ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নবাগত রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল হক। এতে অভ্যন্তরীণ আস্থা ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধির পাশাপাশি হয়রানি ও আর্থিক লেনদেন মুক্ত হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এতে দীর্ঘদিনের পোস্টিং বাণিজ্যের অবসান ঘটেছে।
খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল হক পিপিএম বলেছেন, অর্থের বিনিময়ে পদায়ন প্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা নিজ কর্মস্থলে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না; সে কারণেই আমি কর্মস্থল নির্ধারণে একটি পয়সাও খরচ হতে দিতে চাই না। সবাই নিজের হাতে লটারি টেনে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করছেন। কাজেই ভালো করে কাজ করতে হবে। নিজেদের কাজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। যেকোনো কর্মস্থল থেকে ভালো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ভালো কাজ করলে ভালো মূল্যায়ন পাওয়া যায়। যারা ভালো কাজ করবেন তারা আরো ভালো জায়গায় পদায়ন নিতে পারবেন। প্রতি বছর ভালো ও দক্ষ অফিসারকে কাজের জন্য মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি। পদোন্নতি পরীক্ষার সময়ও লটারির মাধ্যমে তাদের আসন নির্ধারণ করা হয়েছিল। লটারির মাধ্যমে নিজেরা নিজেদের আসন নির্ধারণ করেন। পদায়নের ক্ষেত্রেও প্রত্যেকে নিজের হাতে লটারির টেনে নিজেদের কর্মস্থল নির্ধারণ করেছেন। এতে কোনো বিতর্কের সুযোগ তো নেই-ই; বরং শতভাগ স্বচ্ছতার জায়গা সৃষ্টি হলো।
উৎকোচ বিহীন পদায়নপ্রাপ্ত কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এটা অনন্য দৃষ্টান্ত। পুলিশের পোস্টিং লটারিতে চিন্তাই করা যায় না। দৈবচয়নের মাধ্যমে অসুস্থ পিতা-মাতা বা স্ত্রী থেকে দূরে পোস্টিং হলে তিনমাস বাধ্যতামূলকভাবে নির্ধারিত কর্মস্থলে চাকুরির পর সুযোগ-সুবিধা মতো পছন্দের স্থলে বিনা পয়সায় ফিরে আসাও সম্ভব হয়। এতে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক প্রেষণার সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল থেকে উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে চলমান ‘পোস্টিং বাণিজ্য’ বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে জানানো হয়, পুলিশের সংস্কার আন্দোলন-২০২৪ এর ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য গঠিত কমিটির অধীনে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।