খুলনা মহানগরীর মুজগুন্নি সেন্ট মেরিস কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড এর নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতের দাবী জানিয়েছেন প্রতিদ্বন্দী দুই সভাপতি প্রার্থী । সোমবার খুলনা জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন লুকাস সরকার ও জে,বি মুন্না ।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানাযায়,গত ১৪ই অক্টোবর ২০২২ শে অনুষ্ঠিত সেন্ট মেরিস কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড এর নির্বাচনে সভাপতি পদে ছাতা প্রতীকে নিয়ে লুকাস সরকার ও মোমবাতি মার্কায় প্রার্থী হিসাবে জে,বি মুন্না অংশ গ্রহন করেন। ১৪ তারিখের ঐ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন করেন দুই সভাপতি প্রর্থী ।
লিখিত অভিযোগে তারা জানান, প্রথমত সমবায় আইন অনুসারে ভোট গ্রহনের পুর্বে সংগঠনের এজিএম ও অডিট নিস্পত্তি এবং সদস্যদের লভ্যাংশ দেয়ার বিধান রয়েছে পাশাপাশী ভোট গ্রহনের ৭২ ঘণ্টা পূর্বে ব্যালটের নমুনা প্রার্থীর নিকট দেয়ার কথা থাকলেও উক্ত নির্বাচন এর যাত্রা কয়েক ঘন্টা পূর্বে ব্যালট এর নমুনা প্রার্থীগণের সম্মুখে প্রদর্শন করেন সেন্ট মেরিস কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপক। উল্লেখ থাকে যে ব্যবস্থাপক বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ এর আপন ভাই। যে কারণে এই নির্বাচন এর প্রতিটা ক্ষেত্রে বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ এর প্রতিটা কৌশল সফল হয়েছে। আমাদের কাছে এটি সুস্পষ্ট যে, ভোট গণনার মধ্যে কারচুপি আছে, যে কারণে ভোটের ব্যালট বইয়ের মুড়ি এবং ব্যালট পেপার রি-ডেক করা অতি জরুরী হয়ে পড়ছে।
দ্বিতীয়ত ভোট গণনার সময় আমাদের সকল প্রার্থীদের কেন্দ্রের মধ্যে উপস্থিতির জন্য বলা হয়। আমরা সবাই উপস্থিত হলেও বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ এর এজেন্ট তার পক্ষে সেখানে উপস্থিত হন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, আমারা দুই সভাপতি প্রার্থীর মোবাইল ফোন বাইরে পাঠানো হলেও ফ্রান্সিস দাশ এর জন্য ভোট গণনার কক্ষে তিনি সেল ফোন ব্যবহার করেন। সেখানে উপস্থিত দুইজন সভাপতি প্রার্থীকে শুধু চেক করা হয় ফোন আছে কি তা দেখার জন্য। যা একই কক্ষে উপস্থিত সকলের মধ্যে তাদের জন্য মানহানীকর ছিলো অথচ বর্তমান সভাপতির সেলফোন বীরদর্পে ব্যবহার করছেন অথচ তাকে কোন কর্মকর্তাই কিছুই বলেনি। যা গণনার সময় যোগ করতে দেখা যায়। ব্যালট গণনার সময় আমাদের মধ্য থেকে যাবতীয় অভিযোগ করতে গেলে আমাদের সকল কে চাপের মুখে রাখা হয়। গণনাকারীগণ আমাদের কে ব্যালট পেপার না দেখিয়ে বস্তাবন্দি করেন এবং ফলাফল নির্ধারন করেন। যে কারণে আমরা কেন্দ্র পরিত্যাগ করি। এবং পরিত্যাগের পূর্বে ফলাফল তালিকার স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকি। সাথে সাথে উপস্থিত দায়িত্ব প্রাপ্ত সমবায় কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অবগত করি যে আমরা আগামী বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে জেলা সমবায় অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করবো কারণ ভোট জালিয়াতি হয়েছে, অধিকার হরন করা হয়েছে, অপমানিত করা হয়েছে এবং গণনা নিয়ে আমাদের সাথে গরিমসি করছে ।
তৃতীয়ত্বঃ নির্বাচন আচরণ বিধিতে উল্লেখিত প্রার্থী হিসাবে যে অধিকার আমাদের সকল প্রার্থীর পাওনা ছিলো তা থেকে আমরা সকল প্রার্থী বঞ্চিত কেবলমাত্র বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ ব্যতীত। উল্লেখ্য যে, নির্বাচন চলাকালে প্রার্থীগন কেন্দ্র পরিদর্শনে যেতে পারবেন কিন্তু ফ্রান্সিস দাশ এবং তার সমর্থক গণ ব্যতীত আমাদের অন্য দুই প্রার্থীর কাউকে সেন্টারে বেলা ১২:৪৫ পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি দুইজন সভাপতি প্রার্থী কে অপমান করে ফ্রান্সিস দাশ নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্রের বাইরে যেতে বলেন যদিও দুইজন সভাপতি প্রার্থী তখন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য কেন্দ্রের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন। সেই মুহূর্তে আমার দৃষ্টিগোচর হয় যে সমিতির সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ এর আপন ভাই সমিতির বর্তমান ব্যবস্থাপক কেন্দ্রের মধ্যে বসে ভোটার পরিচয় পত্র বিভিন্ন আগত ব্যাক্তিদের প্রদান করছেন এবং তারা ভোট দিতে যাচ্ছেন। আমারা অভিযোগ করলে আমাদেরকে কেন্দ্রের বাহিরে যেতে বাধ্য করে । সংগত কারনে আমাদের উভয় প্রার্থীর কাছে প্রতিয়মান হচ্ছে ১৪ই অক্টোবর ভোটে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছে।
এ ছাড়াও ভোটার লিস্টে সিংহভাগ ভোটারদের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ সু-কৌশলে বেশির ভাগ প্রার্থীগণের সাথে প্রতারণা করেছেন। মৌখিক ভাবে প্রশ্ন করার পরে ঠিক করে দেয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েও তা ঠিক করা হয়নি। যে কারণে আমাদের অধিকাংশ প্রার্থীদের সকল ভোটারের নিকট নির্বাচনী প্রচারণা করতে বার্থ হয়েছি। কিন্তু বর্তমান সভাপতি ফ্রান্সিস দাশ সু-কৌশলে ভোট গ্রহণের দিন সেই সমস্ত দূরবর্তী সদস্যদের বাস ভর্তি করে নিয়ে আসেন যাদের কাছে আমরা নিজেদের প্রার্থী হিসেবে পৌছাতে পারিনাই এবং তাদেরকে আমরা কোনদিন দেখতে পাইনি অথচ তারা ভোটার । ফ্রান্সিস দাশ এই অপরিচিত ভোটাদের উপস্থিত করেন যা আমাদের নিকট পূর্ণ সন্দেহের উৎপত্তি করে যে এসব ভোটার এনে তার পাল্লা ভারী করেছেন। সেই জন্য ভোটার রেজিস্টার এবং ব্যালট পেপার ও মুড়ি বই রিচেক করা একান্ত প্রয়োজন রয়েছে এমনকি দরকার হলে ফিঙ্গার প্রিন্ট এর ডিএনএ টেস্ট করানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে বলে দুই সভাপতি প্রার্থী আবেদনে উল্লেখ করেন ।