দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। সারাদেশে উন্নত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরীর লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। বর্তমান সরকারের `রুপকল্প-২০২১ ও রুপকল্প-২০৪১’ এর মধ্যেও উন্নত এবং আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের পরিকল্পনা বিদ্যমান রয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার নেটওয়ার্ক তৈরীর ক্ষেত্রে সরকারের এসব পরিকল্পনা বাস্তবে রুপ দিতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে।
`মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, গড়বো উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) খুলনা জোন খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন খুলনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে একের পর এক বিভিন্ন ধরণের প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরী করছে এবং অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবে রুপ দিতে খুলনা সওজ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
খুলনা সওজ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে খুলনাবাসীর বহু আকাঙ্ক্ষিত ভৈরব সেতুসহ বেশ কয়েকটি সড়ক এবং মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, যথাযথ মান এবং প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, বিভিন্ন সড়কে সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন কংক্রিট সেতু/বেইলি সেতুর স্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ এ জাতীয় ৯ টি প্রকল্পে ৭’শ ৮৮ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন চলমান প্রকল্পগুলো হলোঃ
খুলনা- চুকনগর -সাতক্ষীরা (আর ৭৬০) মহাসড়কের খুলনা শহরাংশ নগরীর ময়লাপোতা মোড় থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ( ৪. ০০ কিঃমিঃ) চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্প। প্রকল্পের চুক্তি মূল্য ৮০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা।
বেতগ্রাম -তালা -পাইকগাছা-কয়রা ৬৪.৬০ কিঃ মিঃ সড়ক (জেড৭৬০৪) যথাযথ মানে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্প। প্রকল্পের চুক্তি মূল্য ২’শ ২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
দিঘলিয়া (রেলিগেট) -আড়ুয়া- গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের (জেড-৭০৪০) ২ম কিঃমিঃ ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প। প্রকল্পের দৈর্ঘ ১ হাজার ২১৬ দশমিক ৯৬ মিটার। চুক্তিমূল্য ৩’শ ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩’ শ কোটি টাকা।
সওজের খুলনা জোনের আওতাধীন মহাসড়কে বিদ্যমান সরু ও ঝুঁকিপূর্ন পুরাতন কংক্রিট সেতু/ বেইলী সেতুরস্থলে কংক্রিট সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প (খুলনা অংশ)। এ প্রকল্পের আওতায় ৫ টি (Narrow Bridge) নির্মাণ বাবদ চুক্তিমূল্য ধার্য হয়েছে ৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
নড়াইল -ফুলতলা জেলা সড়কটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (খুলনা অংশ)। প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ২ কিঃ মিঃ। চুক্তিমূল্য ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
দাকোপ-বারবাড়িয়া-মাগুরখালী-তালা জেলাসড়ক (চেইঃ০+০০হতে চেইঃ ৮+৮০০ মিটার পর্যন্ত) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ৮ দশমিক ৮০ কিঃ মিঃ। চুক্তিমূল্য ৪৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
কয়রা-নোয়াবেকী-শ্যামনগর জেলা সড়ক (জেড-৭৬১০) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। প্রকল্পের দৈর্ঘ ৭ কিঃ মিঃ। চুক্তিমূল্য ২৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
তেরখাদা -বর্নাল- কালিয়া জেলা সড়ক (জেড-৭০৪৭) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। প্রকল্পের দৈর্ঘ ৫ দশমিক ৩৬ কিঃ মিঃ। চুক্তিমূল্য ১৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এছাড়া কেশবপুর-নেতগ্রাম জেলা সড়ক (জেড-৭৫৫৩) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। প্রকল্পের দৈর্ঘ ৫ কিঃ মিঃ। চুক্তমূল্য ২০ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
এছাড়া আরো ৫টি প্রকল্পের জন্য ১’শ ৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকার কাজ শীগ্রই টেন্ডার হবে এবং ২ টি প্রকল্পের জন্য ৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে খুলনা সওজের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি আরো জানায়, খুলনাঞ্চলের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো তৈরীর পূর্বে খুলনার কৃতি সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা সদর আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এবং বাকী খুলনা-১, ৪ ৫ ও ৬ আসনের সংসদ সদস্য যথাক্রমে পঞ্চানন বিশ্বাস, আব্দুস সালাম মুর্শেদী, নারায়ন চন্দ্র চন্দ, মোঃ আখতারুজ্জামান বাবু এবং সংরক্ষিত সংসদ সদস্য এ্যাডঃ গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার এর সংগে আলোচনা, তাঁদের নির্দেশনা এবং পরামর্শক্রমে প্রকল্পগুলো তৈরী করা হয় এবং তাঁরা খুলনাঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।