ডিপ্লোমা ইনি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী সার্ভেয়ার পদে কর্মরতদের ১০ম গেট বাস্তবায়নের দবিতে কেন্দ্র ঘোষিত দুই দিনের কর্মসূচির প্রথম দিন সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত পুর্ন দিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন বৈষম্য বিরোধী সার্ভেয়ার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ছাত্র পেশাজীবী অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ। খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী সার্ভেয়ার পদে কর্মরতরা কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্ম পালন করেন। কর্মবিরতি শুরুতে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সার্ভেয়ার জসিম উদ্দিন এর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এসময় নেতৃবিন্দ বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সার্ভেয়িং ডিপ্লোমাধারীগণ ডিজিটাল ভূমি জরিপ, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি অধিগ্রহণ, সড়ক, মহাসড়ক, ব্রীজ, কালভার্ট, নদী/খাল খনন, বাধঁ, ইমারত নির্মাণসহ টপোগ্রাফিক, হাইড্রোগ্রাফিক জরীপসহ সরকারের সকল উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের সকল উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কারিগর হিসেবে বিভিন্ন দপ্তরে সার্ভেয়ার/সমমানের পদে কর্মরত থেকে সার্ভে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
১৯৯৪ সালের ১৯ নভেম্বর সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) ১৬৪ নম্বর প্রজ্ঞাপনের এবং ১৯৯৪ সালের ১ ডিসেম্বরর প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগকে তাঁহাদের অধীনস্থ অফিসসমূহে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের পদে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমাধারীদেরকে ২য় শ্রেণির পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে নির্ধারণ করা হলেও সার্ভেয়িং ডিপ্লোমাধারীদের জন্য নির্ধারিত সার্ভেয়ার / সমমানের পদে সরকার নির্ধারিত গেডের কয়েক ধাপ নীচে ১৪/১৫/১৬ গ্রেডে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮ অনুযায়ী ৪ (চার) বৎসর মেয়াদি সকল ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাশকৃতদের চাকরি/দক্ষতার শ্রেণী করণে মধ্যম সারির ব্যবস্থাপক/সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার / সমতূল্য হিসেবে বলা হলেও সার্ভেয়িং ডিপ্লোমাধারীদের ২য় শ্রেণির মর্যাদা দেয়া হচ্ছে না, যা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮ এর সুস্পষ্ট লংঘন, কারিগরি শিক্ষার অবমূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে চরম বৈষম্যমূলক আচারণ। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সান্নিধ্যে থেকে বাস্তবমুখী কারিগরি শিক্ষার গুরত্ব বাড়তে থাকলেও দেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম সার্ভেয়িং টেকনোলজির ডিপ্লোমাধারীগণের ব্যাপারে সরকারের উদাসিনতা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, বৈষম্য নিরসনে ১৯৯৪ সালের ১৯ নভেম্বর সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) ১৬৪ নম্বর প্রজ্ঞাপন এবং ১৯৯৪ সালের ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটের আলোকে সরকারের মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও সংস্থায় ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (সার্ভেয়িং) ডিগ্রীধারী সার্ভেয়ার/সমমান পদে কর্মরতদের অন্যান্য সকল ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারীদের ন্যায় বেতন স্কেল ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করার দাবিতে আমাদের দীর্ঘ দিন আন্দোলন, সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে ১ অক্টোবর হতে লাগাতার কর্মসূচিতে যাওয়ার বিষয়টি আমরা আমাদের দপ্তর প্রধানকে অবহিত করেছি। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বরবার আবেদন ও তাগিদ প্রদান করা স্বত্ত্বেও অজানা কারনে আমাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার হতে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে সরকারের উদাসিনতা অত্যন্ত দুঃখজনক।
কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচী হিসেবে ৭অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সারাদেশের সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে পুর্ন দিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। আগামী ৮অক্টোবরের মধ্যে আমাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ১০ম গ্রেড বেতন স্কেল বাস্তবায়ন না হলে, আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি প্রদান করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ছাত্র-পেশাজীবী অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ন আহ্বায়ক মো. ইসমাইল হোসেন, বিভাগীয় সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমা্ন, সাধারন সম্পাদক মো. মোতালেব হোসেন, বাংলাদেশ কানুনগো কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মো. জাকির হোসেন মৃধা, ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী পরিষদ খুলনােসেভাপতি মো. শাহিন ইসলাম, বাকাসস খুলনার সভাপতি খান আনিছুজ্জামান ও ১৬-২০ গ্রেডের কর্মচারী স্বমন্বয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুস সবুর শেখ ও খুলনা জেলার সকল দপ্তরের সার্ভেয়ারবৃন্দ।