খুলনা নগরীর শেরে বাংলা সড়কের ‘শেখ বাড়ি’ হিসেবে পরিচিত সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (০৪ আগস্ট) দুপুরে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ ঘটনা ঘটায়।
এছাড়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর লেয়ার যশোর রোডের খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা এবং নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। গুরুতর অবস্থায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। জখম অবস্থায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার, কেসিসির কাউন্সিলর কনিকাসহ আরও ৩ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুরে আন্দোলনকারীরা একটি মিছিল নিয়ে নগরীর শেরে বাংলা রোড়ের শেখ বাড়ির সামনে গিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় ওই বাড়ির সামনে কোন পুলিশ বা নেতাকর্মী ছিল না। একপর্যায়ে তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। হামলাকারীরা ভবনের প্রতিটি তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের আনার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বিকাল পৌনে তিনটার দিকে আগুন নিভে গেলে বেশ কিছু পুলিশ ও এপিবিএন এর সদস্যরা বাড়িতে আসেন। পরে যুবলীগের কিছুই নেতাকর্মীকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাড়ির সামনে আসতে দেখা যায়। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সংসদ সদস্যের বাড়িতে আরেক দফা হামলা হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আন্দোলনকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল থেকে লোয়ার যশোর রোডের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিছু আন্দোলনকারী পিকচার প্যালেস মোড় থেকে ওদিকে যেতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। এ সময় দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মাঝে ককটেল ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
এ সময় আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পিছু হটে। তারা কার্যালয় গিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। কার্যালয়ের নিচে বেশকিছু মোটর সাইকেলেও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সংঘর্ষের সময়ে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে আন্দোলনকারীরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমডি এ বাবুল রানা, শেখ শাহজালাল সুজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে ভর্তি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পর তারা নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের ভবনে ভাংচুর চালায়। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল সংগঠনটির সভাপতি। পরে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ নগর ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ভবনের কিছু কাঁচ ভেঙে যায়। তারা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রবেশ করে সামনে থাকা ৪টি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুপুর দেড়টায় তারা খুলনা প্রেস ক্লাবে ভাংচুর চালায়। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিতে আরেক দফা ভাংচুর করে প্রেস ক্লাবের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া গগণবাবু রোডে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে ভবনের কাঁচ ভেঙে যায়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়ির সামনে অবস্থান নেন|