খুলনা জেলার পাইকগাছা থানা এলাকায় ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।
খুলনা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে খুলনা জেলা পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা করবে। নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশ,ও আনছার থাকবে। দূরাত্ব বজায় রেখে ভোট চলবে ভোট কেন্দ্র থেকে দুইশত গজ দুরে সাধারণ মানুষ অবস্থান করবে।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান যায়ায়দিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান। মঙ্গলবার (৮ জুন) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন।
নির্বাচনের পরিবেশ কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্মানিত ভোটারদের আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আগামী ২১ জুনের ইউপি নির্বাচনে একেবারেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। সেজন্য পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে থাকবে সাদা পোশাকে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, এই নির্বাচনে কাউকেই সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না। প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রধারী পুলিশসহ আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া কেন্দ্রের বাইরে টহল পুলিশ, সাদা পোশাকের পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তৎপর থাকবে।
মোহাম্মদ মাহবুব হাসান আরও বলেন, প্রথম ধাপে খুলনা জেলার মোট ৫টি থানায় নির্বাচন হবে। দাকোপ, বটিয়াঘাটা, দিঘলিয়া, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে জেলা পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে ৩২টি ইউনিয়নের। ২টি ইউনিয়নের দায়িত্ব মহানগর পুলিশের। পাইকগাছা আমাদের সবচেয়ে বড় থানা।
প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ১১ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ার কারণে স্থগিত করা হয়। যেহেতু নির্বাচনের দিন আগে পড়েছিল সে সময় নির্বাচন নিয়ে কিছু কাজ হয়েছিল যে কারণে আমরা প্রস্ততির দিক দিয়ে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছি। ভোট কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ ও সাধারণ বিবেচনা করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আবারও তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এটা নিয়ে আবারও কাজ শুরু করেছি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তি যারা রয়েছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। নির্বাচনটি ৫টি থানায় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হবে বলে শতভাগ আশাকরি।
নির্দিধায় প্রত্যেক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রদান করবেন। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ফিরে যাবেন এজন্য কোনো ধরনের সমস্যা যেন না হয় তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচনের পূর্ববর্তী, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরবর্তী এই তিন সময়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই। এটা আমাদের একটা মেজর প্রায়ারিটি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সারা বছরজুড়ে চলে। তবে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ করে নির্বাচনের আগে আমাদের একটা বিশেষ অভিযান চলে। এবারও সেটা চলছে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পুলিশি ব্যবস্থা যা যা করার দরকার তার প্রাইমারি অবস্থাটা অলরেডি করে ফেলেছি। পরবর্তীতে জেলা নির্বাচনী অফিসার ও ডিসির সঙ্গে সমন্বয় করে বাকি কাজটা করে ফেলবো। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
উল্লেখ্য, খুলনা জেলায় ৯টি উপজেলায় ৬৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে খুলনার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ করা হবে।
ইউনিয়ন গুলো- বটিয়াঘাটা: বালিয়াডাঙ্গা, গঙ্গারামপুর ও আমিরপুর। পাইকগাছা: কপিলমুনি, লতা, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর, গদাইপুর, রাড়ুলী, চাঁদখালী ও গড়াইখালী। কয়রা: কয়রা সদর, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী, আমাদি ও বাগালী। দাকোপ: দাকোপ সদর, পানখালী, সুতারখালী, লাউডোব, কৈলাসগঞ্জ, কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, বাজুয়া ও বানিশান্তা। দিঘলিয়া: গাজীরহাট, বারাকপুর, সেনহাটি, দিঘলিয়া, আড়ংঘাটা ও যোগীপুল।