রবিবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে প্রথম করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা খুলনায় পৌঁছাবে। প্রথমদিনে ১৬ হাজার ৮০০ ভায়াল টিকা আসবে খুলনায়। প্রতি ভয়ালে ১০ জনকে টিকা দেয়া যাবে। তবে খুলনায় প্রথমধাপে ৯৭ হাজার ২৩০ জন সম্মুখসারি যোদ্ধাকে টিকা প্রয়োগ করার বিষয়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদিকে টিকা সংরক্ষণে ব্যবহৃত ৩০ টি আইএলআর প্রস্তুতসহ টিকাদান কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানো হবে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও গুজবরোধে কাউন্সিলিং চলমান। প্রথমধাপের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।
খুলনা সিভিল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনায় প্রথম টিকা পৌঁছাবে ৩১ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে খুলনা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদকে সভাপতি করে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ ১৩ সদস্যের টিকা রিসিভিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিকা সংরক্ষণে ৩০টি আইএলআর (হিমায়িত বক্স) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর স্কুল হেলথ ক্লিনিকে ১৩টি ও নয়টি উপজেলায় ১৭টি আইএলআরে টিকা সংরক্ষণ করা হবে। প্রতিটিতে ৭ হাজার করে ভ্যাকসিন (টিকা) রাখা যাবে। টিকা ২ থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে সার্বক্ষনিক বিদ্যুতের ব্যবস্খা নিশ্চিতে সংরক্ষনাগারে বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি রাখা হয়েছে জেনারেটরের ব্যবস্থা। এছাড়া যুক্ত করা হয়েছে বিদ্যুতের দুটি ফেজও।
এদিকে, টিকা দেয়ার কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমধাপে নগরীর সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতাল, তালতলা হাসপাতাল ও লাল হাসপাতালে করোনার টিকা দেয়া হবে। আর উপজেলা পর্যায়ে স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ টিকা দেয়া হবে। প্রতিটি টিকাদানকারী টিমে দুইজন টিকা প্রয়োগকারী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবে। টিকা প্রদান কাজে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
আরও জানা যায়, নগরের টিকাদান কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালনা করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। সফল বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে সভাপতি ও একই সংস্থার চীফ মেডিকেল অফিসারকে সদস্য সচিব করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে সভাপতি ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ খুলনা গেজেটকে বলেন, ইতিমধ্যে প্রথমধাপের টিকা প্রাপ্তদের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে তালিকায় নাম থাকলেও টিকা পেতে অবশ্যই নিজের এনআইডি ও মোবাইল নম্বর যুক্তকরে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এছাড়া যে কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ইচ্ছুক সেটা উল্লেখ করতে হবে ও সেখান থেকেই টিকা গ্রহণ করতে হবে। তবে ১৮ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধবতী মা ও মুমুর্ষু রোগীরা এ টিকা নিতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভয়ের কোন কারণ নাই। দেশে যারা টিকা নিয়েছে তারা সকলে আল্লাহর রহমতে ভাল আছে। গুজবরোধে নিয়মিত ডোর টু ডোর কাউন্সিলিং ও সমাবেশ অব্যহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, খুলনা জেলায় ৯৭ হাজার ২৩০ জন সম্মূখসারির জনগোষ্ঠীর প্রথমধাপে টিকা প্রদান করা হবে। পরে প্রতি মাসে করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।