‘বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না’ এমন একটি সাধারণ বাক্য প্রায় দোকানে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা যায়। বাকি বিক্রি বন্ধ করতে সাধারণত এমন কাজ করেন দোকানিরা। তবে এসব ধারণা থেকে বেরিয়ে খুলনায় দুস্থদের জন্য বাকিতে পণ্য বিক্রির হাট বসিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে হলে এ হাট উদ্বোধন করেন খুলনা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ।
বাকিতে ২৫টি পণ্য বিক্রি করা হয়। চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, মুরগি, মাছ, স্টেশনারি, জুতা, ব্যাগ, ছাতাসহ দেড় লাখ টাকার পণ্য দিনব্যাপী ২০০ জন বাকিতে ক্রয় করেন। এর আগে বিদ্যানন্দের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জরিপের মাধ্যমে অভাবী পরিবার চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট কার্ড দেন। সে কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো ‘বাকির হাট’ থেকে কেনাকাটার সুযোগ পায়।
বিদ্যানন্দ থেকে জানানো হয়, ’বাকি চাহিয়া লজ্জা দেবেন না’ এই স্লোগানের পরিবর্তে ’বাকি চাইতে লজ্জা পাবেন না’ এই স্লোগানটি তারা প্রমোট করছেন হত দরিদ্র মানুষের জন্য। এই পরিবারগুলোর আজকে টাকা নেই, কিন্তু একদিন তাদের টাকা হবে। সেদিন তারা এই টাকা পরিশোধ করবে। তবে বিদ্যানন্দকে নয়, সমপরিমাণ টাকা পরিশোধ করতে হবে অন্য কোন অভাবীকে।
এমন একটি শর্ত দিয়েই ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকার পণ্য দেওয়া হচ্ছে। বাজার শেষে প্রতিটি ক্রেতার নাম ও বাকীর পরিমাণ লিখে একটি আঙ্গুলের ছাপ নিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা যা দিয়ে প্রতীকীভাবে এই বাকির কথা খাতায় লিপিবদ্ধ করে রাখছে।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিটি সেবামূলক কাজের পেছনে একটি বার্তা থাকে। বাকীর হাটের মাধ্যমে তারা সমাজের মানুষ যেন আরেকজন মানুষকে সাহায্য করে৷ এমনই একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে। একই সাথে সাহায্য চাওয়া কোন লজ্জার বিষয় না। বরং সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য করা মানবিক একটি দায়িত্ব। আর এই দায়িত্বের কথাই বিদ্যানন্দ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে।
বিদ্যানন্দের সদস্যরা খুলনা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জরিপের মাধ্যমে অভাবী পরিবার চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট কার্ড প্রদান করে। সে কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো ’বাকীর হাট’ থেকে কেনাকাটার সুযোগ পায়।