চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃভদ্রাসহ তিন নদী ভাঙ্গণরোধে সরকারের ব্যায় কোটি কোটি টাকা ব্যয় অথচ ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছেনা নদী দখল কারীদের কারনে । অবৈধ দখলদারদের বহাল রেখেই সরকারী রাস্তা ও নদীর ভাঙ্গণ রোধে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। অথচ নদীর বুক দখলকারীদের উচ্ছেদ করে নদীর জোয়ারভাটা স্বাভাবিক থাকলেই নদীতে ভাঙ্গণ হত না। আর সড়কও নষ্ট হত না। ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সরদার আব্দুল গণি সহ খর্নিয়া বাজার এলাকার অনেকেই ক্ষুব্ধতার সাথে এ কথা বলেন।
তারা বলেন, মাত্র কয়েকবছর আগে শোভনা ও আটলিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তি ভদ্রা নদীটিতে ছিলো প্রবল স্রোত। কিন্তু এখন তা মৃত প্রায়। নদীরটির খর্নিয়া বাজারের পশ্চিম পাড়ে আটলিয়া ইউনিয়নের অংশে প্রভাবশালী কয়েকজন ইট ভাটামালিক প্রতিবছর একটু একটু করে নদীর বুকে বাঁধ দিয়ে দখল করেছে। বর্তমানে ভদ্রা নদীর প্রায় তিনভাগ চর পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। পশ্চিম পাড় দখল করায় পূর্বপাড়ে প্রায় ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
শুধুমাত্র ভদ্রা নদী নয় উপজেলার সালতা সহ বেশ কয়েকটি নদী দখলদারদের কারণে নির্দিষ্ট গতিপথ পরিবর্তন করেছে। ফলে এক প্রান্ত দখলদারদের কবলে অপর প্রান্ত ভাঙ্গণের কবলে পড়েছে। নদীর ভাঙ্গণ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন ও নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে জেলার ডুমুুরিয়া উপজেলার খর্নিয়ায় ভদ্রা নদী দখল করে ২০টি ইঁটভাটা গড়ে উঠেছে। এসকল ভাটামাীরকদের মধ্যে যেমন রয়েছে জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিক।
আর নদীদখলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেমন রয়েছেন তেমনি বিরোধীদল জাতীয় পার্টি এমনকি বিএনপি নেতারও পিছিয়ে নেই। এক অর্থে ধরে নেয়া যায় রাজনৈতিক নীতি আদর্শে বিরোধ থাকলেও দখলবাজিতে কোন বিরোধ নেই। ভদ্রা ও নদীর পাড় ঘেষে রয়েছে কেপিব্রিকস, সেতু ব্রিকস, কেবি-১ কেবি-২, স্টোন ব্রিক্স, জাহান ব্রিক্স। এছাড়া রয়েছে এফএমবি, কুইন ব্রিক্স, মেরী ব্রিক্স, পিএমবি, স্টার কেবি, আল মদিনা ব্রিক্স, আল্লাহর দান ব্রিক্স, এনএসবি, রূপা ব্রিক্স, এফএমবি উল্লেখযোগ্য।
এ সকল ভাটা গুলো অধিকাংশই ভদ্রা নদীর জায়গা অবৈধ দখল করে পরিচালিত হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখলকারীদের কাউকে কাউকে জরিমানা হরা হচ্ছে ভাটা আইন লঙ্ঘণের দায়ে। কিন্তু সরকারী জমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। আর স্বস্থানে বহাল থেকে প্রতিবছরই নদীর জমি দখল করছে ভাটা মালিকরা। এক প্রান্তের দখলবাজীর কারণে অপরপ্রান্তে ভাঙ্গণের ফলে বিলীন হচ্ছে সরকারী রাস্তা, ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
শুধুমাত্র দেড় কিলোমিটার ভাঙ্গণ ঠেকাতে সরকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের ব্যয় হচ্ছে প্রায় সোয়া কোটি টাকা। এর মধ্যে নদী গবেষণা ইহ্নটিটিউটের ৭৫ লাখ টাকা এবং এলজিইডির ৪১ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডও ভাঙ্গণরোধে অর্থ ব্যয় করে চলেছে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুত কুমার দাশ বলেন কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে খার্ণিয়া থেকে শোভনা পর্যন্ত কার্পেটিংয়ের সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ভদ্রার পাড়ে ভাঙ্গণে রাস্তাটি ধবসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
তাই স্লোব প্রটেকশনের জন্য কংক্রিটের প্রাচীর দেয়া হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪১ লাখ টাকা। বেম্বু বাইন্ডিং- এর মাধ্যমে বিভিন্ন নদী তীর ভাঙ্গণ রোধ, নদীর নব্যতা এবং ভূমি পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্পের খুলনার তদারককারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মতিয়ার রহমান বলেন, বাঁশ দিয়ে স্রোতের প্রটেকশন দেয়ায় সংশ্লিষ্ট স্থানে পলি পড়ে ভরাট হবে। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোছা: শাহানাজ বেগম বলেন, অবৈধ দখলদার ও ভাটা মালিকদের বিরদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সরকারী জমি পুনরুদ্ধার ও ভদ্রা নদী দখলমুক্ত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।