মহান বিজয় দিবস-২০২১ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষে জাতীয় কর্মসূচির আলোকে খুলনা জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে পঞ্চাশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হবে। ঐদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নগরীর সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল সাড়ে আটটায় জেলা স্টেডিয়ামে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। একই স্থানে সকাল আটটা ৪০ মিনিটে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শিশু-কিশোর সংগঠন, কারারক্ষী, বাংলাদেশ স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লসগাইড সদস্যদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
ঐ দিন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জেলা ও উপজেলা সদরে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ফুটবল, কাবাডি ও হাডুডু খেলার আয়োজন করবে। সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিনেমা হল ও উন্মুক্তস্থানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি’র আয়োজনে শহিদ হাদিস পার্কে মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হবে। ১৬ ডিসেম্বর বিভাগীয় জাদুঘর ও দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য বিনা টিকেটে উম্মুক্ত রাখা হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাদজোহর হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। নৌ-বাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ রকেট ঘাটে বেলা দুইটা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উম্মুক্ত রাখা হবে।
১৬ ডিসেম্বর বাদজোহর বা সুবিধাজনক সময়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে মহিলাদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা ও ক্রীড়ানুষ্ঠান এবং বিকেল সাড়ে তিনটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে শপথ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
ঐ দিন সন্ধ্যা ছ’টায় খুলনা শহিদ হাদিস পার্কে ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আলোচনা শেষে রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। স্থানীয় সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ নিবন্ধ, সাহিত্য-সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। বিআইডব্লি¬উটিএ লঞ্চ ঘাটে স্টিমার, লঞ্চ ও জাহাজ এবং রেলস্টেশনে রেলগাড়ী সজ্জিত করা হবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গিলাতলা শিশুপার্ক, বয়রা শিশু পার্ক ও খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক বিনাটিকেটে শিশুদের জন্য উম্মুক্ত রাখা হবে। জেলা তথ্য অফিস শহিদ হাদিস পার্কে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করবে।
১২ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনা কালেক্টরেট স্কুলে মুক্তিয্দ্ধুভিত্তিক কুইজ ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর শিশু একাডেমি শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। ১৬ ডিসেম্বর সুবিধাজনক সময়ে পূর্ব রূপসা ঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন এর মাজার প্রাঙ্গণে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের বীরত্ব ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।