করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যে খুলনার সকল দোকানপাট ও শপিংমল আজ খোলা হয়েছে। মার্কেটে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতাও দেখা গেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে দোকান ও শপিংমল।
খুলনা মহানগরীর ডাকবাংলা মোড়, পিকচার প্যালেস মোড়, রেলওয়ে মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল মার্কেট, হকার্স মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, এসএমএ রব শপিং মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, নান্নু সুপার মার্কেট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেটে ঈদের আগাম কেনাকাটা করতে অনেক ক্রেতাই ভিড় করেছেন। সেখানে গাদাগাদি করে লোকজন চলাচল করতে দেখা গেছে। রাস্তাদিয়ে অসংখ্য মানুষ পারাপার হওয়ার কারণে ডাকবাংলা মোড়ে রীতিমতো যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেকের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
সকাল ১০ টা থেকে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট খুলতে শুরু করেন। কিছু ক্রেতাকে আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার আগে দোকানের সামনে দাড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।
খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এ্যাপেক্স গ্যালারীর ম্যানেজার মুরাদ জমাদ্দার জানান, দোকানের আয়তন বড় হলেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে একসাথে ১০ জনের বেশী ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। গেটের বাইরে তারা একজনকে দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ যন্ত্র দিয়ে দেখে ক্রেতাদের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। এরপর হ্যান্ড সানিটাইজার ও অন্যান্য লিক্যুইড দেওয়া হচ্ছে। লকডাউনের পর আজ বেচাকেনা ভাল হবে বলে আশা ছিল, কিন্তু তা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে, খুলনা বিপনী কেন্দ্রের সবুজ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ সবুজ জানান, প্রতিবার রোজার প্রথম দিকে বেচাকেনা ভাল হলেও লকডাউনের কারণে ব্যবসা মন্দা। আজ সকালে দোকান খোলার প্রথম দিকে কিছু ক্রেতার দেখা মিললেও দুপুরের পর এর সংখ্যা খুবই কম। তাছাড়া গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় খুলনার আশেপাশের লোকজন কাপড় ক্রয় করতে মার্কেটে আসতে পারছে না। তিনি ঈদের মার্কেট ধরতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার কাপড় ক্রয় করেছেন। কিন্তু লকডাউনে মার্কেটে সময়সীমা নিয়ে তিনি চিন্তিত, যে টাকাটা মার্কেট থেকে উঠবে কি না? তিনি মাস্ক ছাড়া কোন ক্রেতাকে তার দোকানে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না বলে জানান।
নিউমাকের্টের ক্রেতা লিলি আক্তার বলেন, দেশের পরিস্থিতি ভালো নয়, কখন আবার লকডাউন দেয় বলা যায় না। নিউমার্কেটের সোহেল হাসান বলেন, দীর্ঘদিন দোকানপাট বন্ধ, তাই আজ খুলতেই চলে আসছি। ডাকবাংলার লিটন হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতি বাড়লেও কিছু করার নেই, সামনে ঈদ মার্কেট করতে হবে।
খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মাদ বলেন, সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকানপাট খুলতে বলছে। এরপরেও যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলে তাহলে খুলনাসহ সারাদেশ ঝুঁকিতে পড়বে।