ধান উৎপাদনে বরাবরই এগিয়ে থাকেন খুলনার কৃষকেরা। কিন্তু গত দুই বছর ধরে কৃষি শ্রমিক না পাওয়া যাওয়া এবং কৃষি সরঞ্জামসহ জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ধান মারাই ও ধান কাঁটতে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। আবার উৎপাদন খরচ বাড়লেও ধানের মূল্য বৃদ্ধি না পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ মত অবস্থায় কৃষকের দূর্ভোগ লাঘবে ব্যাতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, খুলনা মহানগর শাখা। বিণামূল্যে তারা কৃষকের মাঝে ধান মারাই ও ধান কাঁটার মেশিন বিতরণ করে আসছেন। বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও তেরখাদায় কৃষকদের মাঝে ধান কাঁটার মেশিন ও মারাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। ফলে কৃষকদের আগে যেখানে এক বিঘা জমির ধান কাঁটতে ও মারাই করতে এক হাজার টাকা খরচ করতে হতো। এখন সেখানে মাত্র এক টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাঁটা ও মারাই করা যাবে যুবলীগের দেওয়া কৃষি সরঞ্জামের মাধ্যমে। তেরখাদার আজোগড়া বিলের চার হাজার বিঘার জমির মালিক পাঁচশত কৃষক ফসল কাঁটতে এই যন্ত্রাংশ ব্যবহার করবেন।
আজোগড়া এলাকার কৃষক আলাল মোল্লা বলেন, গত কয়েক বছর করোনার কারলে ধান কাঁটার শ্রমিক পাইনি। কাল বৈশাখি ঝড়ে সকল ধান নষ্ট হয়ে যেত আমাদের। মেশিন দিয়ে ধান কাঁটতে গেলে যে খরচ হয় তা ধান বিক্রি করে ওঠে না। আমাদের লোকসান হতো। সেখানে যুবলীগের এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের অনেক লাভ হবে।
অপর কৃষক শুনু গাইন বলেন, আমার সাড়ে সাত বিঘা জমি। গত বছর ধান কাঁটতে ও মারাই করতে খরচ হয়েছে সাড়ে সাত হাজার টাকা। এর সাথে বীজ, সেচ, সার, কীটনাশক খরচ, যানবহন খরচ যোগ করলে যে উৎপাদন মূল্য হয় তা আমরা বাজরে পায় না। ফলে ধান চাষ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল আমাদের। এখন আমাদের কিছুটা লাভ হবে।
তিনি আরো বলেন, আগে একমন ধান উৎপাদন খরচ হতো ৭৫০ টাকার মত। সেখানে বাজারে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মন বিক্রি হলে আমাদের কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু বাজারে ধানের মূল্য সাড়ে আটশত টাকার বেশি হয় না। বাড়ী বাড়ী এসে যারা ধান কেঁনে তারা দিতে চায় ৭০০টাকা মন। বলেন কি করে লাভ করবো আমরা। আজকে যুবলীগের দেওয়া কৃষি সরঞ্জাম আমাদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভের মুখ দেখাবে।
এ বিষয়ে নগর যুবলীগের আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, কৃষি আমাদের প্রধান পেশা। খুলনা অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। এ কারনেই আমরা করোনার সময় থেকে প্রতি বছরই কৃষকের উপকারে কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ করে আসছি। তার লক্ষ্যে শনিবার খুলনার তেরখাদার আজোগড়ায় কৃষকদের মাঝে ধান মারাই এর মেশিন ফুকো কল যার মূল্য দুই লক্ষ ষাট হাজার টাকা ও ধান কাঁটা মেশিন এসক্রাব মেশিন যার মূল্য এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রলীগ নেতা জহির আব্বাস, ইয়াসিন আরাফাত, মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল, মেহেদী হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিয়েল শেখসহ আরো অনেকে।