শ্রীলঙ্কার সাবেক উপমন্ত্রী নিরুপমা রাজাপাকসে গোপনে দেশ ত্যাগ করেছেন।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুবাইয়ের উদ্দেশে কলম্বো ত্যাগ করেন নিরুপমা। সর্বশেষ তাকে শ্রীলঙ্কার প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কাটুনায়েকে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে দেখা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দৈনিক সিলন টুডে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের চাচাত বোন নিরুপমা রাজাপাকসে ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশটির পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিলেন।
উল্লেখ্য, করফাঁকি, দুর্নীতি ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত নিরুপমার নাম প্যান্ডোরা পেপার্সেও এসেছিল।
বিদ্যুৎ-জ্বালানির ভয়াবহ সংকট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে গত দু’সপ্তহ ধরে শ্রীলঙ্কায় সরকারপতন আন্দোলন চলছে। বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে শ্রীলঙ্কায়। গত মাসে ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কান রুপির মান পড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি।
বিদ্যুৎ-খাদ্য-ওষুধ-জ্বালানি সংকটে অতিষ্ঠ শ্রীলঙ্কার জনগণ গত কিছু দিন ধরে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন, এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কলম্বোসহ দেশের সব বড় শহরে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। জনরোষ সামাল দিতে শনিবার দেশজুড়ে তিন দিনের কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার।
কারফিউয়ের দ্বিতীয় দিন, রোববার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ব্যাতীত ২৬ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভার সবাই একযোগে পদত্যাগ করেন। একই দিন পদত্যাগ করেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও।
তারপর ০৬ এপ্রিল পদত্যাগ করেন গোতাবায়ার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে এমপিরা। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তত ৪১ জন এমপি মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।তবে আন্দোলনরত জনগণ এতে সন্তুষ্ট নন। তারা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও তার বড়ভাই প্রধানমন্ত্রী মহিন্দারও পদত্যাগ চাইছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও কিছু এলাকায় রাজনীতিবিদদের বাসভবনে হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের।