সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা বুধবার , ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
চাল চুরির সংবাদ ঠেকাতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা! | চ্যানেল খুলনা

চাল চুরির সংবাদ ঠেকাতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা!

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা থেকে ৮২১ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয় গত ৯ এপ্রিল। ফাইল ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলা থেকে ৮২১ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয় গত ৯ এপ্রিল। ফাইল ছবি

চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ টাকার চাল চুরির ঘটনার খবরের কারণে মামলার শিকার হয়েছেন চার সাংবাদিক। দেশের অন্য এলাকাতেও সাংবাদিকরা চাল চুরির প্রতিবেদন করতে গিয়ে হামলা এবং হুমকির শিকার হচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে চাল চুরির প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মামলা হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী , প্রতিবেদক রহিম শুভ, জাগোনিউজ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার ও প্রতিবেদক তানভীর হাসান অনুর (শাওন আমিন) বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ডিজিটাল আইনে বালিয়াডাঙ্গি থানায় মামলাটি করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী।
এজাহারে বলা হয়েছে, ৯ এপ্রিল বালিয়াডাঙ্গি উপজেলায় ১০ টাকা কেজি দরের ৬৮ বস্তা চাল উদ্ধার হয়। এর একদিন আগে ওই দুই প্রতিবেদক মোমিনুল ইসলাম ভাসানীকে ‘চাল চোর’ বলে ফেসবুকে পোস্ট দেন। পরে মোমিনুল ইসলাম ভাসানীর বড় ভাই বড় পালাশবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিনকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতে মোমিনুল ইসলাম ভাসানী নিজের ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার অভিযোগে মামলা করেন।

প্রতিবেদক রহিম শুভ বলেন, আসলে মামলা করা হয়েছে আমাদের হয়রানি করার জন্য। আমি ফেসবুক পোস্টে পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আর তার পরদিনই কিন্তু চাল উদ্ধার হয়েছে। এখানে এমন পরিস্থিতি করা হয়েছে যেন চাল চুরির বিরুদ্ধে আমরা কোনো প্রতিবেদন করতে না পারি। এর আগেও আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে।

তবে তানভীর হাসান অনু স্বীকার করেন যে তার প্রতিবেদনে ভুল ছিল। তিনি বলেন, আমার প্রতিবেদনে একটু ভুল ছিল। যার গোডাউন থেকে চাল উদ্ধার করা হয়েছে, তার নামের সাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ভাইয়ের নামের মিল রয়েছে। তাই তার ভাই বলে খবরের হেডিং-এ উল্লেখ করা হয়েছিল। আমরা কিছুক্ষণ পরেই তা সংশোধন করে দেই। কিন্তু তারপরও মামলা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। পুলিশ খুব দ্রুত মামলা নেয়। আসলে এখানে আমরা যারা করোনায় ত্রাণের চাল চুরির বিরুদ্ধে লিখি, তাদের শায়েস্তা করতেই এই মামলা। আমরা যাতে আর কোনো প্রতিবেদন করতে না পারি সেজন্যই এই হীন প্রচেষ্টা।

তিনি জানান, সাংবাদিকরা এই মামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামছেন। প্রেসক্লাব কর্মসূচি দেবে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তার মামলার এজাহারে ৬৮ বস্তা চাল উদ্ধারের কথা বললেও বাস্তবে ওইদিন ৮২১ বস্তা চাল উদ্ধার হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মণ বলেন, ৯ এপ্রিল সকালে স্থানীয় লোকজন পরিবহণের সময় ৬৮ বস্তা চাল আটক করে পুলিশ ও প্রশাসনকে খবর দেয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশসহ আমরা গিয়ে তাদের আটক করি। ওখান থেকে আমরা ভটভটি চালককেও আটক করি। পরে তাকে জ্ঞিাসাবাদ করে কয়েকটি গুদামে অভিযান চালিয়ে আরো ৭৫৩ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। চালের মিল এবং গোউনের মালিক আমিরুল নামে একজন৷ আমিরুল পলাতক আছেন। তার ভাই সামিরুল ও ভটভটি চালক পান্না সরকারকে আটক করা হয়েছে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, এর পিছনে আরো অনেকে জড়িত থাকতে পারেন৷ মামলার তদন্ত করছে পুলিশ। স্থানীয়দের অনেকে মনে করেন, ওই মিল মালিককে সামনে রেখে প্রভাশালীরা এই কাজ করেছে৷ তারা এখন নিজেদের রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে।

স্বেচ্ছসেবক লীগ নেতা মোমিনুল ইসলাম ভাসানী বলেন, আমি একজন ডিলার, কিন্তু ওই চাল চুরির সাথে আমি বা আমার ভাই জড়িত নন। যে ছয় জনকে আসামি করা হয়েছে সেখানেও আমার নাম নেই। তারপরও আমার ছবির ওপর ‘চাল চোর’ লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তারা। আমার ভাইকে জড়িয়ে মিথ্যা খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি লিখিত প্রতিবাদ করার পরও তা সংশোধন করা হয়নি। এ কারণেই আমি মামলা করেছি।

তিনি দাবি করেন, আমি যেহেতু স্বেচ্ছাসেবক লীগ করি, এটা আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন, তাই ওই অসত্য খবর দিয়ে আওয়ামী লীগের সুনামও ক্ষুন্ন করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, আমরা চাল চোরদের বিরুদ্ধে তৎপর আছি।

বালিয়াডাঙ্গি এলাকারই আরেকজন সাংবাদিক আল মামুন জীবন। তিনি দৈনিক অধিকার নামে একটি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। তার বিরুদ্ধে ১৩ এপ্রিল রাতে জিডিটাল আইনে মামলা করেছে পুলিশ। তার অপরাধ তিনি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা্য় লকডাউনের দাবি করেছিলেন। একইসঙ্গে করোনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছিলেন। ত্রাণ বিতরণে স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ওই মামলার পর মামুনকে গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজছে পুলিশ। বালিয়াডাঙ্গির বাসায় গিয়ে মামুনকে না পেয়ে পাশেই দুলছড়ি এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতেও অভিযান চালায়। সেখানে তার স্ত্রী এবং শিশু সন্তান ছিল। মামুন অভিযোগ করেন, আমার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে এখন ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।

মামুন বলেন, এখন আমি নিজের ফোন ব্যবহার করি না। ভয়ে আত্মগোপন করে আছি। মনে হচ্ছে আমি যেন রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছি।

মামলার এজাহারভুক্ত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বেশ তৎপর। বালিয়াডাঙ্গি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আতিকুর রহমান জানান, চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, আমরা তার তদন্ত শুরু করেছি। আমরা তৎপর রয়েছি। আসামিদের সময়মতো গ্রেপ্তার করবো।৷ মামলা যখন হয়েছে গ্রেপ্তার তো করতেই হবে৷ আর সাংবাদিক আল মামুন জীবনকে গ্রেপ্তারে আমরা একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছি। তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আমরা আরো মামলাার খবর পাচ্ছি। সোমবার কুষ্টিয়ায় এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দিনাজপুর ও সরিষাবাড়িতে প্রশাসন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি এর অবসান চেয়ে বলেন,সাংবাদিকরা সরকারের করোনাবিরোধী যুদ্ধে সহায়তা করছেন। কিন্তু ত্রাণের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন করলে ডিজিটাল আইনে মামলা হচ্ছে। এটা সরকারের জন্য বিব্রতকর হবে।

সাংবাদিকদের কোনো প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি থাকলে তথ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করা যেতে পারে৷ তারা তদন্ত করে কোনো সমস্যা পেলে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু সরাসরি মামলা বন্ধ করার দাবি জানান এই সাংবাদিক নেতা।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান মনে করেন এই সময়ে সাংবাদিকদের সুরক্ষা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, ত্রাণ চুরি একটি জঘন্য অপরাধ৷ সাংবাদিকরা তা তুলে ধরছেন৷ তাদের যদি এই কাজে বাধা দেয়া হয়, প্রবিবেদন করলে মামলা দেয়া হয়, তাহলে তা মেনে নেয়া যায় না৷ মেনে নিলে ত্রাণ চোরদের উদ্দেশ্য সফল হবে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

https://channelkhulna.tv/

আইন ও অপরাধ আরও সংবাদ

খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী রকি গ্রেপ্তার

আন্ত:জেলা নারী পাচারকারী চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

ফকিরহাটে ইয়াবাসহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ফকিরহাটের এক সাংবাদিকের ছেলে

খুলনায় সন্ত্রাসী হাড্ডি সাগর গ্রেপ্তার

দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মৃত্যু

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।