চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃচুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ খালের (জিকে প্রকল্প) দুই পাশে প্রকাশ্য দিবালোকেই গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। কয়েকবার এসব স্থাপনা উচ্ছেদে মাইকিং ও নোটিশ দেওয়া হলেও তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা এসব অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দিয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত খালের দুই পাশে চার শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে উপজেলা প্রশাসন বা জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রান্তিক কৃষকদের কথা চিন্তা করে চাষাবাদে সেচ সুবিধার জন্য জিকে সেচ প্রকল্পটি চালু করা হয়। এই সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গাসহ কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার প্রান্তিক চাষিরা তাদের আবাদি জমিতে সেচ দেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলায় জিকে প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৩৭ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি।এক দিকে যেমন নিয়মিত সংস্কার না করায় সেচখাল ভরাট হয়ে গেছে। অন্যদিকে অবৈধ দখলদারদের কারণেও জিকে খাল প্রতিনিয়ত ভরাট হয়ে চলেছে। যার ফলে প্রান্তিক চাষিরা সেচের পানি পাচ্ছেন না।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে থেকেই আলমডাঙ্গার জিকে খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাকা স্থাপনা। স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে পাউবো কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো লাভ হয়নি। তবে, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা গেলে চাষিরা সেচ সুবিধা পাবেন পাশাপাশি বাড়বে ফসল উৎপাদন।
এলাকাবাসী জানান, এক যুগ আগে কুমার নদ ও সংযুক্ত খালের দুই পাড় দখল হতে থাকে। ধীরে ধীরে দখল ছড়িয়ে পড়ে খালের মধ্যেও। অনেকে খালের ভেতর থেকে পিলার তুলে পাকা ভবন নির্মান করা হয়েছে ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ধীরে ধীরে জিকে খালে প্রথমে মাটি ভরাট ও পরে পাকা স্থাপনা তৈরি করেন দখলদারেরা। তাছাড়া প্রতিনিয়ত এই খালে ফেলা হচ্ছে শহরের ময়লা-আবর্জনা। ফলে দূষিতও হচ্ছে খালটি। তারা আরও অনেক অভিযোগ করেন, খাল পাড়ের এসব স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। এমনকি এসব স্থাপনা থেকে তারা প্রতি মাসে ভাড়াও তোলেন। অনেকে আবার রাতারাতি আওয়ামী লীগ নেতা বলে খালের পাশে দোতালা পাকা বাড়ি ও নিচতলায় মুদির দোকান দিয়ে বসেছেন। এ দিকে, প্রতি মাসেই চার থেকে পাঁচটি স্থাপনা গড়ে ওঠায় বর্তমানে তা উচ্ছেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
স্থানীয় এক কৃষক জানান, জিকে খালের পানি নিয়ে তার মতো অনেক কৃষক জমিতে চাষ করেন। কিন্তু অবৈধ স্থাপনার মাটি ভরাটের জন্য বর্তমানে এই খাল নাব্যতা হারাতে বসেছে। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন আলী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা চায় তাহলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম জানান, ‘ইতোমধ্যেই জিকে খালের আশপাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ২৮৪টি স্থাপনাকে চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। শীঘ্রই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।