খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স (ইএস) ডিসিপ্লিন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি) এর মধ্যে এক ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে এই এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী ও বিডিআরসিএস’র পক্ষে মহাসচিব ড. কবির এম. আশরাফ আলম এনডিসি এবং আইএফআরসির পক্ষে হেড অব কান্ট্রি ডেলিগেশন আলবার্টো বোকানেগ্রা এমওইউতে স্বাক্ষর করেন। পরে স্বাক্ষরিত এমওইউ’র কপি সকল পক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
এমওইউ স্বাক্ষর উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, এই এমওইউ স্বাক্ষরের ফলে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন, বিডিআরসিএস এবং আইএফআরসির মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি ও অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসাথে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই ডিসিপ্লিনের গবেষকদের সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। আমি মনে করি, এই এমওইউ’র মাধ্যমে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও উপকৃত হবে। তিনি এই এমওইউ স্বাক্ষরের জন্য বিডিআরসিএস এবং আইএফআরসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী বলেন, রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্টের মতো বৈশ্বিক সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে উভয়পক্ষই উপকৃত হবে। আমি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাথে কাজ করার জন্য বিডিআরসিএস ও আইএফআরসিকে স্বাগত জানাই। আগামীতে এ ধরনের এমওইউ অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করি।
বিডিআরসিএস’র মহাসচিব ড. কবির এম. আশরাফ আলম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের সাথে ইতোপূর্বে আমাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিশেষ করে শহরভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ে আমরা যৌথভাবে কাজ করেছি। স্বাক্ষরিত এই এমওইউর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি দেশ ও জাতি উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং এমওইউর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. মুজিবর রহমান। সূচনা বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক সাধন চন্দ্র স্বর্ণকার। এ সময় জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, ডিসিপ্লিনের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ এবং বিডিআরসিএস ও আইএফআরসির কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাক্ষরিত এমওইউ অনুযায়ী পারস্পরিক সহযোগিতামূলক প্রকল্পের প্রস্তাবনা, বাস্তবায়ন, গবেষণা এবং অ্যাকশন রিসার্চে নিযুক্ত হওয়ার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। এটি তথ্যের আদান-প্রদান, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, পরামর্শ, এক্সপোজার এবং সেইসাথে গবেষণা এবং ব্যবহারিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্দৃষ্টিকে সহজতর করবে। বিশেষ করে উপকূলীয় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান, তিনটি পক্ষের মধ্যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা বৃহত্তর শ্রোতাদের কাছে শেখার এবং জ্ঞানের পণ্যের প্রসারকে বাড়িয়ে তুলবে। এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন থেকে স্নাতকদের ফেলোশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে জলবায়ু-প্ররোচিত উপকূলীয় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তিগত গবেষণাপত্রগুলোতে অবদান রাখার সুযোগ থাকবে। তারা বিডিআরসিএস দ্বারা সুবিধাপ্রাপ্ত ইন্টার্নশিপের সুযোগের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উপকূলীয় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। এছাড়া গ্র্যাজুয়েটরা কেস স্টাডি, নিবন্ধ, ফটোভয়েস এবং জলবায়ু-প্ররোচিত উপকূলীয় ঝুঁকি মোকাবেলা করে এমন অন্যান্য উপকরণসহ বিভিন্ন জ্ঞান পণ্যের বিকাশে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এই উদ্যোগগুলোর ফলাফল স্থানীয় প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করবে এবং জলবায়ু-প্ররোচিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং মানবিক পেশাদারদের একটি বৃহত্তর দলকে অনুপ্রাণিত করবে।
এছাড়া উপকূলীয় স্থিতিস্থাপকতার জন্য অ্যাডভোকেসি সহজতর করা, জলবায়ু-প্ররোচিত উপকূলীয় ঝুঁকি হ্রাস এবং প্রতিক্রিয়া প্রস্তুতিতে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সহযোগিতামূলকভাবে সেমিনার, সম্মেলন, কর্মশালা এবং ওয়েবিনার আয়োজনসহ বেসরকারি খাত ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসহ স্টেকহোল্ডারদের বিস্তৃত পরিসরের কাছে তথ্য এবং সরঞ্জামের প্রচার প্রসারিত করবে।