জাতীয় পার্টির এমপিরা তাদের বক্তব্যে এরশাদের নাম উল্লেখ না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলের কো- চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ। তিনি বলেন, জাপার সংসদ সদস্যরা বক্তব্য দেন। কিন্তু তারা দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের নামও উল্লেখ করেন না। অথচ তারা জাপার সদস্য। এই বিষয়টি দলীয় ফোরামে তুলবেন বলে জানান তিনি।
রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
কাজী ফিরোজ বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে জাপা নির্বাচন করেছে। জাপা সংসদে বিরোধী দলে বসেছে। এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু জাপার কারও কারও বক্তব্যে বোঝা যায় না, তারা কোন দলের সদস্য।
তিনি আরও বলেন, সরকার উন্নয়ন করছে। এই উন্নয়নে জাপার ভূমিকা আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা একবারও জাপার কথা বলেন না। এত কার্পণ্য কেন—এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটা গণতন্ত্রের ভাষা না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাপা অংশ না নিলে নির্বাচন হতো না। সরকার, সংবিধান, সংসদ কিছুই থাকত না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেই জাপা সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
কাজী ফিরোজ বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করছেন। কিন্তু অর্থ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ব্যাংক, লিজিং কোম্পানি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। একটি সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে আত্মীয়-স্বজনের অভাব হয় না। শালা-সম্বন্ধী সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্যাংকঋণের জন্য। পেয়েও যায়। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা চলে গেছে। শুধু পি কে হালদারকে ধরলে হবে না। পেছনে কারা আছে, তা–ও বের করতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেল। এর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত। যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাপার এই এমপি আরও বলেন, জনগণের টাকায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু একটি বিশেষ কোম্পানি এখান থেকে লাভ উঠিয়ে নিচ্ছে।
কাজী ফিরোজ বলেন, ‘আমাদের কিছু সংগঠন আছে। একটি সংগঠন আছে নাস্তিক নির্মূল কমিটি। আরেকটি সংগঠন হচ্ছে ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি। এই নির্মূল করার ক্ষমতা এদের কে দিয়েছে? আমি জানতে চাই। তুমি কে নির্মূল করার? আমার দেশে কোট-কাচারি আছে না? অনেক বিচার করেছে এই সরকার। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হচ্ছে, রাজকারদের বিচার হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, তুমি কেন নির্মুল করার কারা? তোমরা নিজেরা পুলিশ প্রোটেকশনে থেকে এই ধান্দাবাজি করছ, এইটা জনগণ বিশ্বাস করে না। আমি মনে করি যে এদেরকেই প্রতিরোধ করার দরকার। ’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘অনুরোধ করবো, এই সব সংগঠনগুলো বন্ধ করুন। যাতে কেউ মানুষ নির্মূল করতে না পরে। কিসের নির্মূল কমিটি? আমাদের সমাজে একটা ক্যাটাগরি আছে।‘
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যদি বন্ধ না করতেন একটা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতো। একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাত থেকে আমরা বেঁচে গেছি। মার্চে গরম আসবে তখন স্কুল-কলেজ খুলে দিলে ভালো হবে।