সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শনিবার , ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
টানা বর্ষণে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা, ব্যাপক প্রস্তুতি | চ্যানেল খুলনা

টানা বর্ষণে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা, ব্যাপক প্রস্তুতি

অনলাইন ডেস্কঃকয়েক দিনের টানা বর্ষণে ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তিস্তা নদী তীরবর্তী চার জেলার নিম্নাঞ্চলও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নেত্রকোনা চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটির কিছু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। অন্যদিকে অন্তত তিন শতাধিক গ্রামের ঘর, বাড়ির আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পানিবন্দী রয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। রাস্তাঘাট তলিয়ে অনেক এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। ভাঙনের মুখে আছে কয়েকটি বাঁধ। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ এখনো বন্ধ। বৃষ্টি না কমলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ এবং পানিবন্দীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
অন্যদিকে ভারী বর্ষণের কারণে ১০ জেলায় নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। দুর্গত জেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে সাড়ে ১৭ হাজার মেট্রিকটন চাল এবং ৫০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং দুই কোটি ৯৩ লাখ নগদ টাকা। দুয়েক দিনের মধ্যে এসব জেলায় ৫০০টি করে তাঁবু এবং মেডিকেল টিমের পৌঁছে যাবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান।
সচিবালয়ে গতকাল শুক্রবার আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৃষ্টির কারণে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে, তাতে বন্য পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। প্রতিমন্ত্রী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার এবং নীলফামারী জেলায় বন্যা পরিস্থির অবনতি হয়েছে।
ভারতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে যমুনা নদীতে পানি আরও বাড়বে। পাশাপাশি বিহারে গঙ্গার পানি বাড়ায় বালাদেশে পদ্মা অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের নদনদীগুলোর ৬২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে, এর মধ্যে ২৬টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। “সেসব পয়েন্টে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ৫৫১টি সেন্টারকে ঝুঁকিমুক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জামালপুরে ভাঙনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে এবং লালমনিহাটে তিস্তা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে, এগুলো মোকাবেলায় কাজ শুরু হয়েছে।
ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বলেন, যেসব জেলা দুর্গত হতে পারে সেগুলোর পাশাপাশি অন্য জেলাগুলোতেও সমান প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, দেশের ১৩ নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। গতকাল শুক্রবার থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ও দোয়ানি পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২.২৫ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৭.২০ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার, সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে ১২.৪০ সেন্টিমিটার ও কমলাকান্দা পয়েন্টে ৬.৬০ সেন্টিমিটার, কংস নদীর পানি জারিয়াজাজইল পয়েন্টে ৯.৯৫ সেন্টিমিটার, সাঙ্গু নদীর পানি দৌহাজারি পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার, মাতামুহুরী নদীর পানি লামা পয়েন্টে ১২.২৫ সেন্টিমিটার ও চিরিংগা পয়েন্টে ৬.২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক ইরি-বোরো ক্ষেতও তলিয়ে গেছে। অন্যদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দী হয়েছে প্রায় ২ হাজার পরিবার। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার সঙ্গে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী। নদীর তীরবর্তী ২০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক গ্রামের লোকজন। অপরদিকে ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে নিম্ন এলাকায় ১৩ স্থানে ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
চট্টগ্রামে পাহাড় ধস : প্রবল বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার পোড়া কলোনি পাহাড়ে বৃহস্পতিবার পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড় থেকে বালি ও মাটি সড়কে এসে পড়ায় রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানের বিভিন্ন সড়ক এলাকায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়।
সিলেট ও সুনাগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি : অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানে স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সড়ক ডুবিয়ে নদীর পানি ফসলের মাঠ বিশেষ করে আমনের বীজ তলা তলিয়ে গেছে। অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়ছে। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার সব কটি উপজেলা এবং সিলেট মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন করে বন্যা কবলিত হওয়ার খবর এসেছে। সুনামগঞ্জের ৮টি উপজেলায় ১৮৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৬ উপজেলায় ৫০টি মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় পানি ঢুকেছে। অনেক স্থানে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে দেড় হাজার মানুষ পানিবন্দী আছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে গত বৃহস্পতিবার ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল হক জানান।
এদিকে, ছাতকে টানা এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
কুড়িগ্রাম : ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রসহ কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বাড়ায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া জেলার রৌমারী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে চলছে নদী ভাঙন। ভাঙনের কবল থেকে বাঁচাতে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, পানি বেড়ে রৌমারী উপজেলার বলদমারা ঘাটের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী বাগুয়ারচর এলাকার পাকা রাস্তার প্রায় ৩০০ মিটার তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সদর ইউনিয়নের বড় মাদারটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বাড়ায় নতুন করে প্লাবিত সদর ও হাতীবান্ধার ৩০টি গ্রাম। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নীলফামারীর জলঢাকায় তিস্তা ও বুড়ি তিস্তার ডান তীরে ১৩ কিলোমিটার বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনে তলিয়ে গেছে ফুলগাজী ও পরশুরামের ১২টি গ্রাম।
ছয় দিনের টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানে বন্যা দেখা দিয়েছে। উজানের ঢলে বেড়েছে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি। জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী। পাহাড় ধস ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সব উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
রাঙামাটিতে পাহাড়ি ঢলে মানিকছড়ির সড়কের বেশিরভাগ অংশ ধসে পড়ায় রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আছে। খাগড়াছড়িতে দীঘিনালার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে মেরং ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। খাগড়াছড়ির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে দীঘিনালা এবং লংগদুরও।

https://channelkhulna.tv/

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

সাবেক আইজিপি ও কেএমপি কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আদালত চত্বরে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের ওপর ডিম নিক্ষেপ

আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ঢুকতে দেওয়া হবে না তাবলিগ জামাত

কালীগঞ্জে ভারতীয় গরু আনতে গিয়ে যুবক আটক

পাটের ব্যাগ পুনরায় সর্বত্র চালুর উদ্যোগ নিয়েছি : সাখাওয়াত

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।