চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংকটের কারণে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আসছে কম। এ সময়ে পুরোনো আমদানির দায় মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এ অবস্থায় কোনও ব্যাংক যেন আমদানির দায় মেটাতে গিয়ে সমস্যায় না পড়ে, সে জন্য ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
দেশে অঘোষিত লকডাউন চলাকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকটি ব্যাংকের কাছে প্রায় ১৪ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে। এর মধ্যে শুধু গত বৃহস্পতিবার বিক্রি করা হয় ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর গত সোমবার দেড় কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৈদেশিক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন ব্যাংকার জানান, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয় অনেক দেশের পর।
যে কারণে দীর্ঘ সময় পর মাঝে কয়েকদিন ব্যাংকগুলোর হাতে উদ্বৃত্ত ডলার জমা হচ্ছিল। নিয়মিতভাবে যা কিনে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ৯ থেকে ১৯শে মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে ৩০ কোটি ৫০ লাখ ডলার কেনে। এর আগে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় প্রায় প্রতি মাসেই ডলার বিক্রি করতে হয়েছে। গত মার্চের ১০ দিন ছাড়া চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছে ৬৬ কোটি ডলার।
জানা গেছে, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। এ সময়ে নতুন এলসি তেমন না হলেও আগে খোলা যেসব এলসির বিপরীতে আমদানি বিল পরিশোধের মেয়াদ চলে এসেছে তা দিতে হচ্ছে। এছাড়া রমজানের কারণে ভোগ্যপণ্য আমদানি বেড়েছে। অন্যদিকে রপ্তানি কমে গেছে এবং রেমিট্যান্স আসছে খুবই সামান্য। এতে করে ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ডলার কিনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের চাহিদার আলোকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে সামগ্রিকভাবে ডলারের সংকট নেই। কোনো ব্যাংকে বৈদেশিক বা স্থানীয় মুদ্রার চাহিদা দেখা দিলেই বাংলাদেশ ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দেবে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে আমদানি ও রপ্তানির নতুন এলসি হচ্ছে খুব কম। আবার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আসছে হাতে গোনা। গত মার্চের প্রথম ১২ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে শেষ ১৯ দিনে এসেছে মাত্র ৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার, যে কারণে মার্চে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭ কোটি ১৮ লাখ ডলার বা ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স আসছে খুব সামান্য। এর বাইরে অনেক রপ্তানি আদেশ এরই মধ্যে বাতিল বা স্থগিত হয়েছে। নতুন রপ্তানি আদেশও তেমন হচ্ছে না। অধিকাংশ কারখানা এখন বন্ধ। আবার আগের রপ্তানি বিলও আসছে খুব কম, যে কারণে কিছুটা চাপে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার।